খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট ২০১৬: রাজশাহীর তানোর পৌর সদরের কুঠিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল ইসলাম কবিরাজ থেকে কবি হয়েছেন। কিন্তু আর্থিক দৈন্যদশার কারণে মেধাবী এই মানুষটি তার মেধার বিকাশ ঘটাতে পারেননি, এমনকি তার কপালে জোটেনি মুক্তিযোদ্ধার সনদ। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু বয়সের কারণে মুক্তিযোদ্ধার সনদ তার কপালে জোটেনি। আবার সরকারি, বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এগিয়ে আসেনি তাকে সাহায়তা
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি, বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্দ্যোগে কেউ কবির সহায়তায় এগিয়ে আসলে তার মেধা বিকাশের পাশপাশি দেশের সাহিত্য অঙ্গন সমৃদ্ধ করতে বড় ভূমিকা রাখবেন। কবি রেহাউলের একমাত্র আয়ের উৎস্য কবিরাজি, কবিরাজি করে যা আয় হয় তা দিয়ে জীবীকা নির্বাহ করার পাশপাশি কবিতার বই প্রকাশ করেন। কিন্তু কোনো প্রকাশনী সংস্থা এগিয়ে না আসায় তিনি এলাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্য এসব বই সরবরাহ করেন। ইতিমধ্যে কবি রেজাউল ইসলামের প্রায় দেড় শতাধিক ছোট গল্প ও কবিতার বই প্রকাশ হয়েছে. যার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে-আগুনের গান, ফোটা ফুল নিশি, স্বর্ণ রেখা, ভোরের শিশির, কবরের কান্না, রেজাউল সংগীত অন্যতম। তিনি ছাত্র জীবন থেকে শুরু করে এখানো সাহিত্য চর্চা করে চলেছেন। অর্থাভাবে কবি রেজাউল তার লেখা প্রায় ১০টি গ্রন্থ এখানো প্রকাশ করতে পারছেন না।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শান্তিপাড়া গ্রামে বাংলা ১৩৪৮ সালের ১১ অগ্রায়ণ শুক্রবার কবি রেজাউল ইসলাম জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শমমের আলী ও মাতার নাম পদ্ম বিবি। তিনি কালীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি ও ১৯৬৬ সালে চকগোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি অস্টম শ্রেণি পাশ করেন এবং ১৯৭২ সালে হাটগাঙ্গোপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস ও ১৯৭৪ সালে তানোর কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ছাত্র জীবন থেকে কবি রেজাউলের লেখালেখি শুরু করেন এবং ওই সময় স্কুল জীবনেই লেখক হিসেবে এলাকায় তার ব্যাপক সূখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ১৯৮৮ সালে তানোর পৌর সদরের কুঠিপাড়া গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৮৬ সালে ‘প্রাক্ষিক গ্রামবাঙলা’ পত্রিকার সহসম্পাদক,২০০০ সালে ‘ধানসিড়ি’ পত্রিকার প্রচার সম্পাদক, ২০০২ সালে প্রান্তর পত্রিকার সহসম্পাদকের দায়িত্বপালন করেন।
এছাড়াও ২০০৩ সালে তার সম্পাদনায় রুপসী বিলকুমারীর কান্না, ভোরের শিশির, ভোরের গান, পলাশ আজও কাদে ও রক্তেরাঙা ফিলিস্তিন সহ ছোট ছোট অনেক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ‘হরিবাসর’ কবিতা লেখার জন্য তানোর কলেজ অধ্যক্ষ এনসি বিশ্বাস কবি রেজাউল ইসলামে ‘ধ্রবতারা’ উপাধিতে ভূষিত করেন। স্থানীয়রা জানান, আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কবি রেজাউল ইসলাম দেশের সাহিত্য অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করতে বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন। সাহিত্য সচেতন ও শিক্ষানুরাগীরা কবি রেজাউলকে সহায়তা করতে এলাকার ও দেশের বিত্তশীলদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।