খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৭ আগস্ট ২০১৬: গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের আওতাধীন দেশের সব লাইব্রেরিকে ডিজিটাল করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ উপলক্ষে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর ও ব্রিটিশ কাউন্সিল-এর মধ্যে মঙ্গলবার এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের উপিস্থিতিতে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর বারবারা উইকহ্যাম এবং গণগন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশীষ কুমার সরকার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। মঙ্গলবার থেকে পাঁচ বছরের জন্য এ সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়।
বিল এ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন (বিএমজিএফ)-এর অর্থায়নে ব্রিটিশ কাউন্সিলের বাস্তবায়নাধীন ‘লাইব্রেরিস আনলিমিটেড’ প্রকল্পের অধীনে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে ১৮ মাসব্যপি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ পর্যায়ে গণ গন্থাগার অধিদপ্তরাধীন ২৫ টি এবং অন্যান্য ( যেমন: শিশু একাডেমি লাইব্রেরি, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার ও এনজিও সংশ্লিষ্ট) পাঁচটিসহ মোট ৩০টি গ্রন্থাগারকে ডিজিটাইজড করা হবে।
এ পাইলট প্রকল্পে চারটি ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এগুলো হলো প্রচার, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিদেশে শিক্ষা সফর/প্রশিক্ষণ, প্রত্যাশিত লাইব্রেরির ডিজাইন করা এবং আধুনিক প্রযুক্তিগত সরঞ্জামের সমন্বয়ে তা বাস্তবায়ন, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেশাগত জ্ঞান বৃদ্ধি করা এবং প্রকল্প মনিটরিং ও মূল্যায়ন ইত্যাদি।
বিএমজিএফ-এর উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রণালয় জানায়, দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ২৪ কোটি ২৮ লাখ ধরা হয়েছে বলে ব্রিটিশ কাউন্সিল মৌখিক ভাবে জানিয়েছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, দেশে মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদের উত্থান রোধে দেশব্যাপি সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে জোরদার করতে এসব গ্রন্থাগার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গ্রন্থাগারগুলো হবে সৃজনশীল বিকাশের মাধ্যম।
তিনি বলেন, এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মূল লক্ষ্য হলো পাঠাগারের উন্নয়ন করা, তরুণ প্রজন্মকে পাঠাগারমুখী করা এবং তাদের মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ হিসেবে তৈরি করতে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত করা।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের প্রত্যেক জেলায় গণ গ্রন্থাগার আছে। উপজেলা পর্যায়েও গ্রন্থাগার স্থাপনের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এসব গ্রন্থাগার তরুণ প্রজন্মের জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃজনশীল বিকাশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করবে। মন্ত্রণালয়ের অনুদান প্রাপ্ত সব গ্রন্থাগারকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। যারা এসব নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে পরবর্তীতে তারাই কেবল অনুদান পাবে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আকতারী মমতাজ, অতিরিক্ত সচিব মো. মনজুরুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক দিদারুল চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।