খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০১৬: দেশের ‘উন্নয়নের স্বার্থে’ সরকার কঠোর হচ্ছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, বর্তমান মেয়াদ শেষে শেখ হাসিনার অধীনে ভোট করে ফের সরকার গঠনে যত কঠোরতা দরকার তা করা হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই নেতা বলছেন, “এখন আমাদের লক্ষ্য একটাই- শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যত কঠোর হওয়া দরকার হব। আরও শক্ত ও কঠোর হস্তে দেশ পরিচালনা করা হবে।”
সরকারের কঠোরতার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, “আমাদের দেশের কয়েক বছর আগে পরে স্বাধীনতা পেয়ে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশই উন্নত হয়ে গেছে। এর একমাত্র কারণ ওই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান কঠোর হস্তে দেশ পরিচালনা করেছে। বাংলাদেশকে উন্নত করতে হলে আমাদেরও আরও কঠোর হতে হবে।”
১৯৫৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে মালয়েশিয়ায় ক্ষমতায় রয়েছে ইউনাইটেড মালয়জ ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন-ইউএমএনও। সরকার গঠনে জোট করতে হলেও সব সময় প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসছে এই দলটি থেকে।
ইউএমএনও’র নেতা মাহাথির মোহাম্মদ ১৯৮১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার শাসনামলে মালয়েশিয়ার ব্যাপক অর্থনৈতিক অগ্রগতি আসে। তবে সে সময় নাগরিক অধিকার ক্ষুণœ হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
নাসিম বলেন, “উন্নত দেশের মত শক্ত ও কঠোর হয়ে দেশ পরিচালনা করা হবে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন দিয়ে আবার সরকার গঠনের জন্য যত কঠোর হওয়া দরকার আমরা হব।”
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা বিএনপি শেখ হাসিনার অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোট বর্জন করে। ওই নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
এরপর থেকে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ আন্দোলন করে আসছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট।
এ প্রসঙ্গে বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় নাসিম বলেন, “যেই গণতন্ত্র বিচারহীনতার শিক্ষা দিয়েছে; বঙ্গবন্ধু হত্যা, ২১ শে অগাস্ট বোমা হামলাসহ শত শত মানুষ হত্যার বিচার হতে দেয় না সেই গণতন্ত্র আমরা বিশ্বাস করি না।
“আমরা খুনিকে খুনি বলি, কালোকে কালো বলি।”
বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময় বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়ার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “হত্যাকাণ্ড হলে বিচার তো দূরের কথা তদন্তও হয়নি। আর ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার তদন্তের নামে তারা জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছে।”
২০০৫ সালে দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর মহানগর নাট্য মঞ্চে এই সমাবেশের আয়োজন করে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, “শোকের মাসে প্রতি বছর বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা জন্ম দিনের নামে নাটক সাজায়। আর সারা দেশের মানুষ তাকে ধিক্কার জানায়।
“বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জণগণের ধিক্কার ও জনরোষ থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য এবার জন্মদিন পালন থেকে বিরত ছিলেন। তিনি নাকি বন্যা দুর্গত এলাকার লোকদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে জন্মদিন পালন করেননি। যদি তাই হত তবে বিএনপির একটা নেতাকর্মীও কেন বন্যা দুর্গত এলাকায় যায়নি? সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি?”
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহিউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বক্তব্য দেন।