খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০১৬: আলিফ হোসেন, তানোর : রাজশাহীর আলীগঞ্জ বাইপাস এলাকায় রাতারাতি অবৈধভাবে গড়ে উঠা আল্লার দান বেকারি এ্যান্ড কনফেকশনারিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী হচ্ছে নিুমাণের খাদ্যসামগ্রী। জানা গেছে, এই বেকারিতে তৈরী হচ্ছে চানাচুর, বিস্কুট, পাউরুটি, কেক, পেটিস ও বারগারসহ বিভিন্ন ধরণের খাদ্যসামগ্রী। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল (এ্যামোনিয়াম) দিয়ে এসব খাদ্যসামগ্রী তৈরী ও বিভিন্ন এলাকার বাজারজাত করা হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্ষতিকর উপকরণ দিয়ে তৈরী এসব খাদ্যসামগ্রী নিুমাণের হলেও মোড়কগুলো অতি আকর্ষণীয় ও উন্নতমানের। সেই সঙ্গে মোড়কে বিএসটিআই’র সিল থাকায় ক্রেতারা আগ্রহ সহকারে এসব পণ্য কিনে প্রতারিত হচ্ছেন। এদিকে এসব খাবার স্বাস্থ্যকর না নিুমাণের তা বোঝার ক্ষমতা নেই বেশিরভাগ ক্রেতার। ফলে ক্রেতার এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেকারি মালিক নির্বিঘেœ এই অপকর্ম করে চলেছেন।
রাজশাহীতে মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অনেক নামিদামি কারখানা ও বেকারির আর্থিক জরিমানা করলে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিুমাণের খাদ্যসামগ্রী তৈরীর প্রবণতা কমছে না। বিএসটিআই’র নিদ্রিষ্ট ফি প্রদান করে পণ্য ও খাবার তৈরীর অনুমতি নিয়ে বেকারি মালিক আড়ালে নিুমাণের খাদ্যসামগ্রী তৈরী করে আকষর্ণীয় মোড়কে বাজারজাত করছে। বেশিরভাগ পণ্য থাকে প্যাকেট করা তাই প্যাকেট না ছিঁড়ে কোনো খাবার দেখার কোনো উপায় নেই। ক্রেতারা প্যাকেট ছিঁড়ে দেখলেন খাদ্যটি খাবার অযোগ্য তখন প্যাকেট ছেড়ার কারণেই দোকানী আর পণ্যটি ফেরত নিবে না। বেকারিতে তৈরী প্যাকেট করা খাদ্য সামগ্রীর প্যাকেটের গায়ে ব্যাচ নং, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদোর্ত্তীণের তারিখ, মূল্য ও পরিমাণের কথা উল্লেখ করার কথা থাকলেও আল্লার দান বেকারির তৈরী পণ্য এসব উল্লেখ থাকে না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সরেজমিন, রাজশাহীর অলীগঞ্জ বাইপাস এলাকায় আল্লার দান বেকারির কারখানাতে গিয়ে দেখা গেছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিস্কুট, রুটি ও কেক তৈরী করা হচ্ছে। তেলের পাতিলে মরা তেলাপোকা ও টিকটিকি ভাসছে, কারখানার শ্রমিকের হাতে চর্মরোগ থাকলেও কোনো গ্লোব ব্যবহার করছে না। শ্রমিকের গায়ের ঘাম গিয়ে খাবারে মিশছে, এছাড়াও মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর (এ্যামোনিয়াম) নামের উপকরণ পাউরুটি ও বিস্কুট তৈরীর সামগ্রীতে মেশানো হচ্ছে। এব্যাপারে আল্লার দান বেকারি এ্যান্ড কনফেকশনারির মালিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ্যামোনিয়াম ছাড়া বেকারির কোনো সামগ্রী তৈরী করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বিএসটিআই’র অনুমোদন নিয়ে বৈধভাবে তিনি এসব খাবার সামগ্রী উৎপাদন করছেন এবং তাদের উৎপাদিত খাদ্যপণ্য মানসম্মত বলে তিনি দাবি করেন। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, ওই বেকারির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি, বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।