খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০১৬: এম লুৎফর রহমান নরসিংদী : নরসিংদীতে তিতাস গ্যাস অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭ হাজার বাড়ির অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। আজ বৃহস্প্রতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলার হাজীপুর, বদুয়ারারচর, কান্দাপাড়া, দড়িপাড়া, কোনাপাড়া, পুরানপাড়া, হোসেনপুর, খাসেরচর সহ কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
নরসিংদী তিতাস গ্যাস এর অঞ্চলিক বিক্রয় কেন্দ্রে ভারপ্রাপ্ত উপ মহা-ব্যাবস্থাপক তওহিদুল ইসলাম এই অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোতাকাব্বির আহম্মেদের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে রাখে। কারিগরী সহ ব্যাবস্থাপকের নেতৃত্বে একটি কারিগরী দল মাটি খুড়ে প্রায় ৪ হাজার ফিট ৩ ইঞ্চি ও ২ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের লোহার পাইপ উদ্ধার করে। খুব নিম্মমানের লোহার পাইপ থেকে যে কোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার সম্ভাবনা ছিল বলে জানান তিনি।
তবে এই ঘটনায় কাউকে আটক বা জরিমানা করা যায়নি। অভিযান চলাকালে সংযোগ বিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন । এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, নরসিংদীতে একে একে সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ তোলে নেয়া হবে। কেউ অবৈধ ভাবে গ্যাস ব্যবহার করতে পারবেনা। এই বিষয়ে প্রশাসন যথেষ্ট কঠোর পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল সড়কের পাশ দিয়ে যাওয়া তিতাসের উচ্চ চাপের সরবারহ লাইন থেকে অবৈধ ভাবে সংযোগ দিয়ে প্রায় ৭ হাজারের বেশী বাড়িতে গ্যাস দেওয়া হয়। এত সরকার প্রতিমাসে প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নরসিংদী জেলা প্রশাসনের ম্যাজিষ্ট্র্যাটগণ বিভিন্ন কাজে ব্যাস্ত থাকায় অভিযান পরিচালনা কিছুটা সময় সাপেক্ষে। সেই সুযোগে সাধারন মানুষকে ধোকা দিয়ে বারবার বাড়ি থেকে টাকা তুলে পুনরায় সংযোগ দিচ্ছে। এই সুযোগে কতিপয় আওয়ামিলীগ ও যুবলীগ নেতা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও জানা যায়।
নরসিংদী তিতাস গ্যাস বিক্রয় কেন্দ্রের উপ মহা-ব্যাবস্থাপক তওহিদুল ইসলাম বলেন, পুনরায় অবৈধ সংযোগ নেয়া ও সরকারী সম্পদের ক্ষতিসাধনের জন্য মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। এব্যপারে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনের সিদ্ধান্ত হাতে নিয়েছে। এখন থেকে বিভিন্ন এলাকায় দু-একদিন পর পর অভিযান চলবে। নরসিংদীতে কোন ধরনের অবৈধ গ্যাস সংযোগ থাকবেনা।
উল্লেখ্য, নরসিংদীতে প্রায় ১ লক্ষের মতো অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে ইতিপূর্বে চোর সিন্ডিকেটে ম্যাজিষ্ঠ্র্র্যাট, পুলিশ, সাংবাদিক, তিতাসের লোকজনের উপর হামলা চালিয়ে গাড়ী ও মটর সাইকেল ভাংচুর করেছে। হামলা ও অবৈধ গ্যাস সংযোগ এর কারনে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হলেও আইনী নিতে পারেনি পুলিশ। এছাড়া পুলিশ মোটা অংকের টাকা নিযে আসামী না ধরায় এর বিস্তার আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাই অনেকটা বেপরোয় এখন গ্যাস চোরাই সিন্ডিকেট।