Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০১৬: সালাম, মুন্সীগঞ্জ: জেলার শহরের উপকন্ঠে রমজানবেগ গ্রামের ভন্ড পীর হাবিবুর রহমান নারী কেলেঙ্কারী ঘটনায় পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কুমারখালী গ্রামের মৃত- গনি মিয়ার ছেলে ছোট বেলা থেকেই নানাবাড়ী রমজানবেগ গ্রামে বড় হয়। পিতা- গনি মিয়া নদীতে মাছ ধরে চালাতো জীবন জীবিকা। ফাঁকে ফাঁকে গান- বাজনা করিত। এক সময় নিজেকে পাগল গনি শাহ নাম দিয়ে বিভিন্ন বয়সের নারী/ পুরুষকে জার ফু দিয়ে টাকা কামাই করতে শুরু করেন। গনি মিয়া মারা যাওয়ার ৮ বছর পর তার ছেলে হাবিব পিতার ভাঙ্গা কবরকে পাকা করে লাল কাপড় দিয়ে ডেকে দেন।নেমে পড়ের মাজার ব্যবসার ধান্ধায়। ভন্ডপীর হাবিবুর রহমান তার বাবার কিছু অন্ধভক্তদের মাধ্যমে প্রচার করতে থাকে যে, তার বাবা স্বপ্নে দেখিয়েছে তুমি আমার কবরটাকে মাজার বানাও। এই স্বপ্ন দেখার পর ভক্তদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে করবটি টাইলস বসিয়ে মাজারে রুপান্তরিত করেন। পরে মাজারের নাম দেন পাগল গনি শাহ মাজার। আর হাবিবুল্লাহ তার নাম পরিবর্তন করে হয়ে যান পীরজাদা হাবিবুর রহমান। এর পর পুরো দমে শুরু হাবিবুর রহমানের অর্থ ও নারী মিশন। রমজানবেগ ও কুমারখালী গ্রামে আলাদা দুটি আস্তানা গড়ে তোলেন। অল্প দিনেই হাবিবুর রহমান হয়ে যায় কোটিপতি। সরেজমিনে গিয়ে আরো জানাযায়, পীর হাবিবুর রহমান অশিক্ষিত নারীদের ভূল বুঝিয়ে বলতেন গুরু শিষ্যের মিলন না হলে বেহেশত পাবেনা। ফলে অবুঝ নারীরা পীরের ছলনায় পড়ে বেহেশত পাওয়ার আশায় নিজেদেরকে যৌন মিলনে লিপ্ত করে। দীর্ঘ তিন বছরে প্রায় ৩৫ টি কুমারী/ বিবাহিত মেয়ের সর্বনাশ করেও ক্ষান্ত হয়নি ভন্ডপীর হাবিবুর রহমান। সর্বশেষ রমজানবেগ গ্রামের সুমনা নামের মেয়ের সর্বনাশ করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এমনটাই জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মহিলা ভক্ত রেসি বেগম বলেন, আমি পীরের ভক্ত হওয়ার আগে বুঝতে পারিনি তার চরিত্র এতোটা খারাপ। রাতের বেলায় তার দরবারে আসলে দেখতাম পীর সাহেব তার গোপন কক্ষে মেয়েদের সাথে আলো নিভিয়ে কথা বলতে। জিজ্ঞাসা করলে তার একান্ত খাদেম শাহীন ও জহির বলতো বাবা ধ্যানমগ্ন অবস্থায় আছে।আবার অনেক সময় বলতো পীর সাহেব রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, যেসকল মেয়েদের সন্তান হতো না তাদেরকে পীর সাহেব চিকিৎসা দিতেন। যে সকল মেয়েদের সন্তান হতো না তাদেরকে পীর হাবিবুরের দেয়া কিছু নিয়ম পালন করতে হয়। প্রথমে জার ফু পরে বন্ধা মায়েদেরকে পীর সাহেবের কাছে আসা যাওয়া করতে হয়। তাতে নাকি বন্ধা মায়েদের গর্ভে সন্তান চলে আসে।এখন শুনতেছি পীর হাবিবুর অনেক মেয়ের সর্বনাশ করে পালিয়ে গেছে।
পীরের খুব কাছের ভক্ত আব্দুল কাদির জানান,প্রতি সপ্তাহে পীরের বাড়ীতে উরছ হতো । বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত নারী পুরুষ ও ভক্তরা আসতে নানা ধরনের রোগ/ তদবীর নিয়ে। ভক্তরা নানা সমস্যা নিয়ে আসার পর তাদেরকে জার ফু দিত। তিনি আরো বলেন, এক সময় ভক্তদের কাছ থেকে রোগ মুক্তির হাদিয়া হিসাবে গরু, মহিষ আর মোটা অংকের টাকা নিতে শুরু করে। মানুষ অন্ধ বিশ্বাসে লক্ষ লক্ষ টাকা দিত পীর হাবিবকে।
এদিকে রমজানবেগ থেকে পালিয়ে গিয়ে সিরাজদিখানের কুমারখালী তার বাবার মাজারে চলে যায়। সেখানে যাওয়ার পর নানাভাবে এলাকাবাসী ও ভক্তরা নারী ও অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা কথা জেনে যায়। কুমারখালীর পাগল গনী শাহ মাজার গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। কুমারখালী এলাকার পীরভক্ত আক্তার মন্ডল বলেন, এই পীর বিভিন্ন সময় ভন্ডামী করে তার রমজানবেগ এটাকায় অর্থ ও নারী কেলেঙ্কারীতে জড়িয়ে পড়েন। এবং সেখান থেকে পালিয়ে এসেছে। এলাকাবাসী ভক্তদের মাধ্যমে পীরের নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা জেনে যায়। তখন হাবিবুর রহমান কৌশলে কুমারখালী থেকেও পালিয়ে যায়। তিনি এখন এই কুমারখালী গ্রামে নেই।
ভন্ডপীর হাবিবুর রহমানের সাথে ফেনালাপকালে তিনি বলেন, আমাকে নিয়ে নানাভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি পালাইনি কুমারখালীতেই আছি। রমজানবেগ আসেন না কেন? এমন প্রশ্ন শোনার পর ফোনটি কেটে দিয়ে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন। পরে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে (এএসপি) মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেল কায়সার রিজভী কোরায়েশীর সাথে ফোনালাপকালে তিনি বলেন, এই পীরের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি অতি গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে । তদন্ত শেষে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।