Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

39খোলা বাজার২৪, শনিবার, ২০ আগস্ট ২০১৬: জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি কারও ‘স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি’ মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ইতিহাসের বিচারে এই হত্যার নেপথ্য নায়কদেরও ক্ষমা হবে না।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বিএসএমএমইউ শাখার আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমার বিশ্বাস বাংলার মাটি এই রক্ত হজম করবে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, এ যাবত যাদের মৃত্যু হয়েছে, কারও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। অন্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
“ইতিহাসেরও একটা বিচার আছে, আদালত আছে। সে আদালতে মঞ্চের নেপথ্যের অপরাধীদের, বেঈমান, বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমা হবে না।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
এই হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ জনের মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে কার্যকর করা হয়। এরা হলেন- সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমদ (আর্টিলারি), বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিন (ল্যান্সার)।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি সাতজনের মধ্যে এম রাশেদ চৌধুরী, এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী, আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেমউদ্দিন ও আব্দুল মাজেদ বিদেশে পালিয়ে আছেন। আর দণ্ডিত আব্দুল আজিজ পাশা পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন।
১৫ অগাস্ট না হলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও বিধবা হতেন না মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “যে বুলেট বঙ্গবন্ধুর প্রাণের প্রদীপ নিভিয়ে দিয়েছে, শেখ হাসিনা-শেখ রেহানাকে এতিম করেছে, সেই বুলেট কিন্তু বেগম জিয়াকেও বিধবা করেছে।
“জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসিত ও পুরস্কৃত না করতেন, তাহলে আরেকটা ষড়যন্ত্রের বুলেট জিয়াউর রহমানকে হত্যার দুঃসাহস পেত, এটা আমাদের বিশ্বাস হয় না।”
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে খুনের পর দেশের চিত্র পাল্টে যাওয়ার কথা তুলে ধরে সেসময়ের ছাত্রলীগ নেতা ওবায়দুল কাদের বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা হলে ছিলাম, ডালিমের কণ্ঠস্বর শুনে ঘুম ভেঙ্গেছে। রাস্তায় বেরিয়ে অনেক কিছু দেখেছি, অনেক চেহারা দেখেছি। গলিপথ দিয়ে অনেক কাপুরুষের পলায়নের দৃশ্য দেখেছি।
“বিশ্বাসঘাতক মোশতাকের সঙ্গে টেলিভিশনের পর্দায় অনেকের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখেছি। বঙ্গবন্ধু যাদেরকে নেতা বানিয়েছিলেন, বড় করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্ত যখন ৩২ নম্বরের সিড়িতে অযতœ-অবহেলায় পড়ে আছে, সেই মুহূর্তে টেলিভিশনে তাদেরকে দেখলাম।”
যারা খুনীদের পলায়নের সুযোগ দিয়ে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছে ইতিহাস তাদেরকে ক্ষমা করবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাদের বলেন, “আমরা সবাই জানি, কারা খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। যেজন্য আজকে ছয়জনকে পাওয়া যাচ্ছে না, এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
“এদেরকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি কে দিয়েছিল? কেন এই সত্য বলা হয় না? কারা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে খুনিদের বিচার রুদ্ধ করেছিল? সেই ইতিহাস কি আমাদের অজানা?”
স্বাচিপের বিএসএমএমইউ শাখার সভাপতি অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, চিকিৎসক নেতা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব।