এখন পর্যন্ত ওজন কমানোর যতগুলো পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো অনেক আগে থেকে প্রচলিত। তবে সঠিকভাবে ওজন কমাতে জানা সব বিষয় লক্ষ রাখা দরকার।
এসব বিষয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতেও স্থূলতা, বিপাকীয় ওষুধ এবং ক্লিনিকাল পুষ্টিবিদ ডা. অঞ্জলি হুদা সাঙ্গওয়ান।
২০, ৩০ ও ৪০শে ওজন কমানো: বয়স বিশের ঘরে থাকতেই ওজন কমালে উত্তম ফল মেলে। তবে প্রতি দশক পার হওয়া সঙ্গে শরীরের বিপাকীয় ক্ষমতা কমে। তাই খাওয়া নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ওজন বাড়বে। আর বয়স ৩০ বা ৪০ পৌঁছানোর পরও যদি খাদ্যাভ্যাস ২০ বছর বয়সের মতোই রয়ে যায় তবে ওজন বাড়তেই থাকবে।
তাই বয়স বাড়ার সঙ্গে তাল রেখে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমাতে হবে। পুষ্টিকর খাবার যেমন- ফলমূল, বাদাম, ‘কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট’, সবজি ইত্যাদির প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে হবে। ডোনাট, পেস্ট্রি, মিষ্টি ইত্যাদি ‘জাঙ্ক ফুড’ হবে শখের খাবার।
খাবারের বদলে শেইক: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ি ‘মিল রিপ্লেসমেন্ট শেইক’ পান করা যেতে পারে। তবে নিজের ইচ্ছা মতো কিংবা বিজ্ঞাপন দেখে এগুলো গ্রহণ করা উচিত নয়। মনে রাখতে প্রকৃত খাবারের মতো আর কিছু নেই। একমাত্র অতিরিক্ত মোটা ব্যক্তি এবং শারীরিক সমস্যা থাকলেই এই শেইক খাওয়া উচিত। এমনকি ওজন কমানোর ‘সাপ্লিমেন্ট’ও নিতে হবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ি।
রাতে বেশি তাই সকালে বাদ: রাতে ভূরিভোজ করার মানে এই নয় যে সকালের নাস্তার সময়ও আপনি ক্যালরিতে ভরপুর। উল্টো অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, সকালের নাস্তা বাদ দিলেও মানুষ মোটা হয়। তাই নতুন সকালে নতুন যাত্রা।
পর্যাপ্ত পানি: পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা ওজন কমানোর সব চাইতে সহজ উপায়। এছাড়াও পটাশিয়ামে ভরপুর খাবারও বেশ উপকারী। তবে শরীরে পানি জমে যাওয়া দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
দুগ্ধজাত খাবার পরিহার: ক্যালসিয়ামের বিকল্প উৎস না থাকলে খাদ্যাভ্যাস থেকে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার বাদ দেয়া যাবে না। তবে ‘ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্ট’ অর্থাৎ দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার পেটে সহ্য না হলে অন্য কথা। উচ্চ কোলেস্টেরল, হৃদরোগ এবং স্থূলতা যাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে তাদেরকে ডাক্তাররা দুগ্ধজাত খাবার খেতে নিষেধ করেন। এমন সমস্যা না থাকলে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে, তবে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন ভালো মানের হয়।
হুজুগে ওজন কমানো: ‘সাত দিনে ওজন কমানোর খাদ্যাভ্যাস’ আমার দেখা সবচাইতে বাজে ধরনের হুজুগ। এই খাদ্যাভ্যাসে একজন মানুষ সারাদিন মাত্র একটি খাবারই খায়। দ্বিতীয়ত হুজুগ হল সারাদিন পিৎজা, বার্গার আর ঝটপট নুডুলস খাওয়া আর পরে না খেয়ে থেকে তা পুষিয়ে নেয়া। এ থেকে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিজনীত জটিলতার সৃষ্টি হয়। তৃতীয় হুজুগ হল লবণ বাদ দেওয়া। থাইরয়েড রোগীদের জন্য আয়োডিনের একমাত্র উৎস লবণ। আর দীর্ঘসময় এটি বাদ দিলে থাইরয়েডে কার্যক্ষমতা কমে যায়, ফলে আরও বেশি ওজন বাড়ে।