খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২২ আগস্ট ২০১৬: চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পদ্ধতী বাতিল করে চাকুরী স্থায়ীকরণ এবং চাকুরীতে পূণ:বহালের দাবীতে নাটোরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া শতাধিক মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জার মানববন্ধন করেছে। সোমবার দুপুরে শহরের কানাইখালী এলাকায়, নাটোর প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের মাধ্যমে ভুক্তিভোগীরা তাদের সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে এই মানববন্ধন শুরু হয়। ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন চলাকালে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মিটার রিডার লিয়াকত আলী, ফারুক হোসেন, ফিরোজ আহমেদ, মাহবুবুর রহমান এবং ম্যাসেঞ্জার রফিকুল ইসলাম ও আজমত আলী।
বক্তারা দাবী করেন, তারা চাকুরীতে যোগদানের পর ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারী পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড থেকে একটি অফিস আদেশ পাঠানো হয়। আদেশে বলা হয়, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত মিটার রিডার ও ম্যাসেঞ্জাররা তিন মেয়াদে মোট ৯ বছর একই অফিসে চাকুরী করতে পারবেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পর তারা কোন প্রকার নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার আলোকে অন্য বিদ্যুৎ অফিসে চাকুরীতে যোগদান করতে পারবেন। এভাবে তারা ৫৫ বছর বয়স পর্যন্ত চাকুরী করতে পারবেন। ইতোমধ্যেই গত ২ জুন পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড থেকে আরেকটি দপ্তরাদেশ পাঠানো হয়। আদেশে বলা হয়, কোন অফিসই কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যানের পূর্বানুমতি ছাড়া কোন চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ দিতে পারবে না। তারা গত ২১ জুলাই তাদের ৯ বছরের চুক্তিভিত্তিক চাকুরীর মেয়াদ শেষ করেছেন। মেয়াদ শেষের ২-৩ মাস আগেই অফিস থেকে ফরোয়ার্ডিং নিয়ে তারা বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই নিয়োগপত্রও হাতে পেয়েছিল। কিন্তু চাকুরীতে যোগদান করতে গেলে তাদেরকে আদেশের কথাটি বলে যোগদান করতে দেয়া হয়নি। আবার অন্য আবেদনকারীদেরকেও যোগদান করার কোন পত্র দেয়া হচ্ছে না।
বক্তারা আরো দাবী করেন, পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড থেকে পাঠানো আদেশের কথা বলে মূলত: বিদ্যুৎ অফিস কতৃপক্ষ নতুন লোক নিয়োগ দিতে অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করতে চাচ্ছে। চাকুরীতে পূণ:বহাল না হতে পেরে তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছেন উল্লেখ করে সমস্যাটি সমাধানে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মিটার রিডার মাহবুবুর রহমান দাবী করেন, পাবনার চাটমোহর এলাকার মিটার রিডার করিম হোসেন, মিলন হোসেন এবং মশিউর রহমান, পাবনার শাহজাদপুরের ম্যসেঞ্জার মনিরুল ইসলাম এবং ফরমাজুল ইসলাম নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ-২ এ আবেদন করেছিলেন। তাদেরকে চাকুরীতে যোগদানের জন্য পত্রও পাঠানো হয়েছিল। যোগদান করতে গেলে তাদেরকে অফিস আদেশের অজুহাত দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ম্যানেজার বেলাল উদ্দিন জানান, নিয়োগ প্রকাশিত হওয়ার পরই কতৃপক্ষ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী লোকবল নিয়োগ করবে।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ম্যানেজার শ্রী নিতাই কুমার সরকার জানান, তিনি ইতোমধ্যেই লোকবল নিয়োগের অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় চেয়াম্যানের কাছে পত্র পাঠিয়েছেন। অনুমতি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করা হবে।