খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৪ আগস্ট ২০১৬: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্য মায়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেঁদেছেন। তার জন্য মায়া হয়, দুঃখ হয়।’
বুধবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির মহড়াকক্ষে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে কামরুল ইসলাম আরও বলেন, আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, আপনি এমন একটা পাপিষ্ঠ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যারা রাজনীতির নামে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদে জড়িত। আপনাকে কাঁদতে হবে, অজোরে কাঁদতে হবে। তাদের দায়িত্বে যতদিন আছেন, ততদিন আপনার এই কান্না থামবে না।’
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনি বোধহয় অনেক কষ্ট পাচ্ছেন, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে ফিরে আসার একটা বাসনা হয়তো আপনি লালন করছেন, কিন্তু আপনি ফিরে আসতে পারবেন না। এই পাপিষ্ঠদের সঙ্গে যতদিন আছেন ততদিন আপনার স্বস্তি নেই শান্তি নাই, কেঁদে বুক ভাসালেও শান্তি পাবেন না।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘আমারদেশ অনলাইনসহ ৩০টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধের প্রতিবাদ সমাবেশ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা নির্যাতনের শিকার হওয়া বেশ কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
স্মরণসভায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সন্ত্রাস করবেন, বোমাবাজি করবেন, আগুন সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করবেন, এরপর বলবেন-রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে হয়রানি করা হচ্ছে। সেটা হবে না। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের যদি রাজনৈতিক চরিত্র থাকে, রাজনীতি করে গণতান্ত্রিক চরিত্র নিয়ে, তাহলে কোনো রকম হয়রানির প্রশ্ন উঠে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে বলে আজকে আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। যতই ক্ষমতাধর হন না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
বিএনপির বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ‘৯১ থেকে ‘৯৬ পর্যন্ত আপনাদের একটা চরিত্র ছিল। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আপনাদের চরিত্র একেবারে পাল্টে গেছে।’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার বাধাগ্রস্ত করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সংসদে কোনো আলোচনা করতে দেওয়া হয়নি এটা নিয়ে। সুপ্রিম কোর্টের সবচেয়ে দুর্নীতিবাজ বিচারককে দেওয়া হয়েছিল তদন্ত কমিশনের দায়িত্ব। জজ মিয়া নাটক বানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে দুই বার অধিকতর তদন্তের ফলে সমস্ত সত্য ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। বিচার চলাকালে ২৯৪ কার্যদিবস উচ্চ আদালতে গিয়ে সময় নষ্ট করা হয়েছিল।’
এই বছরের মধ্যে ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হবে উল্লেখ করে সাবেক এই আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার যত চেষ্টা করা হোক না কেন, এ বিচার হবে। প্রথম অধিকতর তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা চলছে। দ্বিতীয় অধিকতর তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা শেষে বিচারের রায় হবে এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা বক্তব্য দেন।