খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৪ আগস্ট ২০১৬: : সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রাবেল তালুকদারের উপর বর্বরোচিত হামলা করে নগদ এক লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ তদন্ত করেছে সুনামগঞ্জ জেলা ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশ। বুধবার বিকেল ১টার দিকে ফতেহপুর বাজারস্থ মুরারীচাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে ঘটনাস্থলের আশপাশে সরজমিন তদন্ত করেন জেলা ডিবি পুলিশের এসআই আবুল কাশেম। গোপনীয় তদন্তের অংশ হিসেবে তিনি অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের মানীত সাক্ষীদেরকে আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জানা যায়,উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন তালুকদার এর সন্তান রাবেল তালুকদার গত ১১ জুলাই সোমবার বিকাল ৫টায় নগদ ১ লক্ষ টাকা নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার প্রাক্কালে ফতেহপুর বাজারে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রাবেলের উপর হামলা করে পার্শ্ববর্তী নোয়াগাও গ্রামের মৃত রমেশ তালুকদারের পুত্র শীতেশ রঞ্জন তালুকদার ও তার ভাই শীতল তালুকদার,মৃত যজ্ঞেস তালুকদারের পুত্র পবিত্র তালুকদার যীশু ও উপেন্দ্র তালুকদারের পুত্র আশীষ তালুকদার প্রমুখ সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীরা পাওনা টাকা পরিশোধ করার পরও রাবেলকে বাজার থেকে ধরে নিয়ে ফতেহপুর মুরারীচাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে রাস্তায় আটকিয়ে রেখে বেদম মারপিঠের একপর্যায়ে প্রাণে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার পকেট হতে নগদ এক লক্ষ টাকা ছিনতাই করে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজন আহত রাবেলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করান। ঘটনার পর আহত রাবেল ছিনতাইকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিশ্বম্ভরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি রাবেলের দায়েরকৃত অভিযোগটি তদন্তের জন্য এস আই রুবেলকে দায়িত্ব দেন। পুলিশের কাছে তদন্তাধীন থাকাবস্থায় দীর্ঘ এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রাবেলের অভিযোগটি এফআইআর হয়নি। গত ২১ আগস্ট রোববার সালিশে বিষয়টি ফায়সালার দোহাই দিয়ে কয়েকজন সালিশী দায়েরকৃত অভিযোগটি এফআইআর করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বিরত রাখেন। সালিশীদের মধ্যে কয়েকজন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রাবেল তালুকদারের দায়েরকৃত অভিযোগের অন্যতম আসামী মুরারীচাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শীতেশ রঞ্জন তালুকদারের পক্ষে পত্রিকায় প্রতিবাদ প্রকাশের পাশাপাশি সালিশেও আসামী পক্ষে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেন। ঐদিন সরকারী নির্দেশে বিদ্যালয় চালু থাকলেও অভিযোগের অন্যতম আসামী শীতেশ তালুকদার বিদ্যালয়ের ক্লাস চলাকালীন সময়ে স্থানীয় বেশ কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষককে উপজেলা সদরে এনে সালিশে তার পক্ষে প্রভাব বিস্তার করেন। পরে ন্যায় বিচার না পাওয়ায় কথিত সালিশের রায় প্রত্যাখ্যান করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রাবেল। এরই ধারাবাহিকতায় ন্যায় বিচার লাভের প্রত্যাশায় জেলা পুলিশ সুপার হারুন-অর রশীদ এর কাছে অভিযোগ দায়ের করা হলে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি এসআই আবুল কাশেম বুধবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে সরজমিন তদন্ত করেন। ডিবি কর্মকর্তার তদন্ত শেষ হতেনা হতেই আসামীদের পক্ষ নিয়ে একই গ্রামের গোপাল দাশের পুত্র সন্ত্রাসী বাবলু দাশ অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে প্রাণনাশের হুমকী দেয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।