খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট ২০১৬: রাজশাহীর তানোরের তালন্দ ইউপির নারায়নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে রহস্যজনক ভাবে ১৬টি ল্যাপটপ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ল্যাপটপ চুরির প্রায় দু’সপ্তাহ অবিাহিত হলেও এখানো পুলিশ চুরি হওয়া ল্যাপটপ বা কোনো ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি। এ ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিক ভাবে চারজনকে আটক ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন তবে তাদের কাছে থেকেও তেমন কোনো ক্লু উদ্ধার করতে পারেনি। এদিকে চুরি হওয়া ল্যাপটপ উদ্ধারে থানা পুলিশ ব্যাপক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। কিšত্ত প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন আলীর রহস্যজনক ভূমিকার কারণে এসব ল্যাপটপ চুরির বিষয়ে সাধারণ মানুষের মনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক একেক সময় একেক জনের নামে অভিযোগ উঙ্খাপন করায় গ্রামের পুরুষ ও উঠতি বয়সের যুবকদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। এতে গ্রেফতার এড়াতে রাতে গ্রাম প্রায় পুরুষ শূণ্য হয়ে পড়ছে। ফলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৬ আগস্ট শনিবার সকালে নারায়নপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব খোলার পরে ল্যাপটপ চুরির ঘটনা প্রকাশ পায়। এতে ধারণা করা হচ্ছে বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার দিবাগত রাতে এসব ল্যাপটপ চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন আলী বাদি হয়ে কম্পিউটার শিক্ষক সুলতানা রাজিয়া, নৈশপ্রহরী জাহাঙ্গীর ও দপ্তরি রফিকুল এই তিন জনের নাম উল্লেখ করে তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, তবে রহস্যজনক কারণে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পায় ল্যাপটপ রাখা ঘরের দরজায় লাগানো তালা যে কোনো চাবি দিয়ে খোলা যাচ্ছে এতে রহস্য আরো ঘনিভূত হয়ে। ওদিকে অজ্ঞাত কারণে সভাপতির অনুমতি না নিয়ে গত মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহ¯প্রতিবার প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন আলী ছুটিতে ছিলেন। ফলে এই চুরির ঘটনায় এলাকাবাসির মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসি বলেন, নৈশপ্রহরী জাহাঙ্গির প্রধান শিক্ষকের নিকট আতœীয় নৈশপ্রহরী জাহাঙ্গির ও প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন চুরির নাটক সাজিয়ে ১৬টি ল্যাপটপ আতœসাৎ করেছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কম্পিউটার (ল্যাব) ঘরের চাবি থাকে প্রধান শিক্ষকের কাছে, এছাড়াও কম্পিউটারের ঘরে শিক্ষার্থী এমনকি সচারচার সাধারণ শিক্ষকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।
বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সহকারি এক শিক্ষক বলেন এই চুরির ঘটনায় প্রধান শিক্ষক নিজেই জড়িত আছে, তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাছাড়া এতো বড় ঘটনা তিনি সভাপতির কাছে গোপণ রেখেছিলেন কেনো। এব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নাজিম উদ্দীন বলেন, চুরি ও মামলার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক তাকে কিছু জানায়নি, তিনি পরে জানতে পেরেছেন।
এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন আলী বলেন, চোর তো আর বলে কয়ে চুরি করবে না, মামলা করা হয়েছে দেখা যাক কি হয়। এ ব্যাপারে তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন,প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন আলী এই চুরির বিষয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির নাম করায় গ্রামের ঊঠতি বয়সী যুবকদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।