Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

44খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৬ আগস্ট ২০১৬: ভারত ফারাক্কা বাঁধের গেট খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ সেতু এলাকায় প্রতি তিন ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার ৩০টি গ্রাম।

পানি বাড়ার গতি অব্যাহত থাকলে শনিবারের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশংকা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
হঠাৎ করে পদ্মায় পানি বাড়ায় দৌলতপুর উপজেলা চিলমারী ও রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এসব গ্রামের প্রতিটি ঘরেই পানি ঢুকে গেছে। ঘরে মজুদ রাখা পাট, ধান ও মরিচসহ সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। এলাকায় তীব্র খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
ভারত ফারাক্কা বাঁধের গেল খুলে দেয়ায় পদ্মায় পানি বেড়ে যাচ্ছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীতে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। সেখানে শুক্রবার দুপুর ১২টায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৪ দশমিক ০৬ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা থেকে মাত্র পয়েন্ট ১৯ সেন্টিমিটার দূরে।
এর আগে ১৮ আগস্ট এ পানির পরিমাণ ছিল ১৩ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার। ১৯ আগস্ট ছিল ১৩ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। ২৫ আগস্ট ছিল ১৩ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। প্রতি তিন ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রধান শাখা গড়াই নদেও অব্যহতভাবে পানি বাড়ছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমূল হক জানান, বিহারে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ভারত ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেয়ায় পদ্মায় পানি বেড়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘যে গতিতে পানি বাড়ছে তাতে শনিবারের মধ্যে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে। আমাদের টিমের সদস্যরা সর্বক্ষণিক মনিটরিং করছে।’
দৌলতদিয়া উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে পদ্মা নদীর পানি বাড়ায় চিলমারীর ১৮ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে এসব মানুষ। সাম্প্রতিক সময়ের বন্যায়ও এত ক্ষতি হয়নি।
রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন জানান, রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ১২ গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। এখানকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এলাকায় তীব্র খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে দৌলতপুর উপজেলা চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করলেও এখন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে পানিবন্দি মানুষ।
চর বাহিরমাদি গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমাদের সব ঘরে পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরে রাখা ধান-পাট সব নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের কেউ খোঁজ-খবর নিচ্ছে না। এভাবে নদীর পানি বাড়তে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে আমাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে চলে যেতে হবে।’
বাজুমারা গ্রামের বাসিন্দা বলেন, ‘নলকূপ ডুবে যাওয়ায় পান করার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। নৌকায় করে গ্রামবাসীকে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’