Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
107863_563খোলা বাজার২৪, শনিবার, ২৭ আগস্ট ২০১৬: স্বাধীনতার ঘোষক ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পদক বাতিলের চেষ্টা করা হলে তা আত্মঘাতী হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।দুটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের উল্লেখ করে মির্জা আলমগীর অভিযোগ করেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের ষড়যন্ত্র করছে সরকার, যা নোংরা রাজনীতিরই অংশ।

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হবে না, আগামীকালের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এমন ঘোষণা দেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন বিএনপি নেতা।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা জানতে পেরেছেন মন্ত্রিসভা কমিটিতে জিয়ার স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, যাঁরা গায়ের জোরে নোংরাভাবে জিয়ার কীর্তি মুছতে চাচ্ছেন, তাঁরাই একদিন মুছে যেতে পারেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতির সূচনা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। জাতিকে বিভাজনের রাজনীতি থেকে একত্রিতও করেছিলেন তিনি। তবে সরকার আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। স্বাধীনতা পদক প্রবর্তন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। এখন তিনি বাদ যাবেন, তার সম্মান থাকবে না কিন্তু তার কীর্তি থাকবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তে গোটা জাতি বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং যুদ্ধ করেছেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকার তার অবদানের জন্য তাকে বীর উত্তম খেতাব দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষও জিয়াউর রহমানকে তখন থেকেই চেনে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি ২০০৩ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা পদক হিসেবে স্বাধীনতা পদক দেন। এটা ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরম ঔদার্যের দৃষ্টান্ত।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের দলীয় মূল্যায়ণ আমরা সবাই জানি। কিন্তু দলীয় মুল্যায়নে রাষ্ট্র চলে না, রাষ্ট্র সবার। এই রাষ্ট্রকে যদি দলীয় বানাতে চান তখন রাষ্ট্র থাকবে দলই থাকবে না।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু ইতিহাসে নয়, বহু মানুষের হৃদয়ে আছেন পরম শ্রদ্ধায়। কাজেই তিনি স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবেনই। যারা গায়ের জোরে নোংরাভাবে তাকে মুছতে চাইছেন, তাতে তিনি ফিরলে হয়তো একইভাবে তারাও মুছে যেতে পারেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটি কথা স্পষ্ট করে করে বলতে চাই- বর্তমান আওয়ামী লীগ যে রাজনীতি করছে, তা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। হতাশা এবং দুর্ভাগ্যের সাথে লক্ষ করছি, এই সরকার ঐক্যের রাজনীতিকে বিসর্জন দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে গোটা জাতিকে বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে বিভক্ত করে ফেলছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সামরিক ক্ষেত্রে শৌর্যবীর্য ছাড়া আর কোনো ক্ষেত্রে মেধা, কৃতিত্ব যোগ্যতা ও নেতৃত্বের স্বীকৃত হিসেবে দেশি-বিদেশি কাউকেই কোনো রাষ্ট্রীয় খেতাব, পদক ও ভুষণে বিভুষিত করাকে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলো। একাডেমিক অনার ছাড়া বিদেশ থেকে কোনো সম্মাননা অর্জনকেও রাষ্ট্রপ্রতির প্রাক অনুমোদন গ্রহণ করার শর্ত যুক্ত করেছিল তারা। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় সম্মাননার ওপর আরোপিত সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। ১৯৭৭ সালে দেশে প্রথম স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক প্রবর্তন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাদের পদক প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশকে চরম সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। একদিকে গণতন্ত্র ও অন্যদিকে জঙ্গিবাদের সঙ্কট। এই সঙ্কট থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি মাত্র পথ হচ্ছে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসা।

সরকারকে ভয়াবহ পথ থেকে সরে এসে জনগণের আকাঙ্খা পুরণ করার জন্য গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যথায় কোনোদিনই জাতি আপনাদের ক্ষমা করবেনা এবং ভবিষ্যতে এর জবাব দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।