জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগের হিসেবে কোরবাণীর ঈদকে সামনে রেখে ৩১ হাজার ৪৪০টি গরু, ৮১১টি মহিষ, ৫১ হাজার ৪৪৪টি ছাগল ও ১ হাজার ৩৩২টি ভেড়া মিলে মোটা ৮৫ হাজার ২৭টি পশু মোটা-তাজা করা হয়েছে। মেহেরপুর জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের হিসেবে এবার ছোট বড় মিলে ৩৮৬টি খামারে গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এছাড়া অনেক পরিবার একটি দুটি করে গরু মোটা- তাজাকরণ করেছে।
মেহেরপুর জেলায় গরু মোটাতাজাকরণের বড় ফার্ম গাংনীর মালসাদহ গ্রামে এ্যাপকম ক্যাটেল ফার্ম। সেখানে চারটি শেডে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করতে দেখা যায়। মুরগি, ছাগল, ভেড়ার পাশাপাশি এ ফার্মের মধ্যে একটি পুকুর রয়েছে। সেখানে মাছ চাষ করা হচ্ছে। ফার্মের মালিক মঞ্জুরুল ইসলামসহ পনের জন নারী পুরুষ পশুর সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন। তিনি জানান, পশু মোটাতাজাকরণে রাসায়ানিক দ্রব্যাদি ও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা হয়। যা মানব দেহের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। আমার ফার্মে প্রাকৃৃতিক উপায়ে পশু মোটাতাজাকরণ ছাড়াও মাছ চাষ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ১০ হাজার মুরগীও পালন করছি। গরুর গোবর ও মুরগীর বিষ্ঠা মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। পশুকে প্রাকৃতিক ঘাস, ভুষি, খৈল, খড়সহ রাসায়নিক মুক্ত খাবার দেয়া হয়। কোন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য বা ট্যাবলেট গরুকে দেয়া হয় না। এজন্যই এই ফার্মের গরু স্বাস্থ্যসম্মত। তিনি আরও জানান,তার ফার্মে বর্তমানে ১৮০টি গরু রয়েছে। এগুলোর বয়স ২৭ মাস । প্রতিটি গরু ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে কিনে ১০ মাস লালন-পালন করে কোরবাণীকে সামনে রেখে বিক্রি করা হয়। প্রতিটি গরু ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়ে থাকে।
মালসাদহ গ্রামটি ঘুরে দেখা যায় গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে একটি দুটি করে গরু পালন করতে। গ্রামের আবদুল করিম ও সালেহা বেগম বলেন, গত ১০-১২ বছর ধরে তারা একটি দুটি করে গরু মোটাতাজাকরণের মাধ্যমে নিজেরা স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের মতো গ্রামের অধিকাংশ পরিবার গরু পালন করেই ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। তারা মনে করেন বিদেশে শ্রম বিক্রি করার দরকার নেই। তারচেয়ে নিজ দেশে পরিকল্পিতভাবে গরু পালন করলে কোন পরিবারে অভাব ঢুকতে পারবে না।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা সুশান্ত হালদার জানান, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে নিষিদ্ধ ডেক্সামেথ্যাসন ট্যাবলেট খাইয়ে মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি চালু ছিল। জেলা প্রাণী সম্পদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ উদ্যোগ নিয়ে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পশু পালনে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে খামারিদের। এই উদ্যোগ সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে যাবে।
খোলা বাজার২৪, বুধবার,৩১ আগস্ট ২০১৬: কোরবাণীর ঈদকে সামনে রেখে জেলায় এবার প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে অনেক খামারি এবং পারিবারিকভাবে অনেকে কোরবাণীর পশু মোটা-তাজা করেছে। এসব পশু ইতোমধ্যে বাজারজাতও শুরু হয়েছে। জন স্বাস্থ্যের কথা ভেবে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণে জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ তত্ত্বাবধান করছে। এসব পশুর মধ্যে আছে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া।