তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে একজন চ্যাম্পিয়ন।’
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, ‘অষ্ট্রেলিয়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারকরণে আগ্রহী।’
‘আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই, বিশেষ করে জ্বালানি খাত এবং শিক্ষা খাতে’, উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে পারষ্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য শিগগিরই অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।
সন্ত্রাসকে বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, তাঁর সরকার এই সমস্যা দূরীকরণে দেশব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ শিক্ষকসহ সারাদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী গণসচেতনতা সৃষ্টির পদক্ষেপ নিয়েছি… এক্ষেত্রে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে।’
তিনি এ প্রসঙ্গে দেশের ৬৪টি জেলায় সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করে তাঁর সরকারের জনমত সৃষ্টির উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি- প্রভৃতি বিষয়ে আরো বৃহৎ পরিসরে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানান।
নারীর উন্নয়নে তাঁর সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোন দেশই তাদের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করা ব্যতীত এগুতে পারে না।’
বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীরা এগিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা এখন প্রায় প্রতিটি পর্যায়েই পুরুষের কাছাকাছি অবস্থানে চলে এসেছে। শিক্ষা, ক্রীড়া এবং সৃজনশীল কর্মকান্ড- কোন কিছুতেই তারা আর পিছিয়ে নেই।
মেয়েরা শিক্ষাক্ষেত্রে বরং ছেলেদের থেকে এগিয়ে গেছে বলেও এ সময় তিনি উল্লেখ করেন।
স্থানীয় সরকারে বিশেষ করে ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনে শতকরা ৩০ ভাগ আসন নারীদের দিয়ে পূরণের বিধান রাখা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী জানান।
তিনি এ প্রসঙ্গে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, সশস্ত্রবাহিনী এবং আইন-শৃঙ্খলা রাক্ষাকারী বাহিনীতে নারীরা কর্মরত রয়েছে উল্লেখ করে দেশের সকল শ্রেণী পেশার ক্ষেত্রেই উচ্চপদে নারীরা আসীন হয়েছেন বলেও জানান।
প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান থাকার কথা উল্লেখ করে এই সম্পর্ক সেই ১৯৭২ সালে প্রথম অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ভুক্ত (ওইসিডি) দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের সময় থেকেই বলেও জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া সরকার ও জনগণের মূল্যবান অবদানের কথাও স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।