
খালেদা জিয়া আরো অভিযোগ করে বলেন, মুজিব সরকার দেশ থেকে গণতন্ত্র দূর করে বাকশাল কায়েম করলো। জিয়াউর রহমান আসার পর গণতন্ত্র আনলেন। আপনারা যদি সেসময়কার (জিয়ার আমলের) মন্ত্রিসভার ক্যান্ডিডেটদের দেখেন, দেখবেন তারা সবাই সুযোগ্য ও ভালো লোক ছিলেন। যে দেশে গণতন্ত্র হারিয়ে গিয়েছিল সেই দেশে তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনলেন। তিনি সবাইকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনিই নির্বাচন দেওয়া শুরু করলেন। জিয়াউর রহমান সবার সঙ্গে কথা বলতেন। কৃষক, শ্রমিক থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী- সবার কথা তিনি শুনতেন।
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, আজকে সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে এই আওয়ামী লীগ। দেশে যদি গণতন্ত্র সচল না থাকে তাহলে কোনো প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে না। আর প্রতিষ্ঠান সচল না থাকলে গণতন্ত্রও থাকতে পারে না। যেখানে ন্যায়বিচার থাকে না, গণতন্ত্র থাকে না, সেইখানে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে।
সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এই আওয়ামী লীগের সময়ই জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিল প্রথম। মনে পড়ে আপনাদের, যশোরের উদীচীসহ আরো বিভিন্ন জেলাতে এ রকম ঘটনা আমরা ঘটতে দেখেছি। কিন্তু কোনো অপরাধী ধরা পড়ে নাই। কোনো জঙ্গি ধরা পড়ে নাই।
জঙ্গিদের ধরে বিচারের মুখোমুখি না করে কেন মেরে ফেলা হয়, তা জানতে চান খালেদা জিয়া। একইসঙ্গে জঙ্গিদের মেরে ফেলার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো রহস্য রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আবারো নিজের বিরোধিতার কথা জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি বলেন, যেসব গোপন চুক্তির কথা শুনতে পাই তা জনগণের স্বার্থে নয়। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। সুন্দরবনের কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্র হওয়া উচিত নয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বন্ধু হলে যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যাবে না তা কোনো বন্ধুত্ব নয়, আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের প্রাপ্য আদায় করা উচিত।
এ সময় খালেদা জিয়া ‘সাহস নিয়ে এবং কোনো অরাজকতা-বিশৃঙ্খলা-হট্টগোল নয়, যা নির্দেশ দেওয়া হবে শান্তিপূর্ণভাবে সব মোকাবিলা করে’ এগিয়ে যাওয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যাব। ইনশাল্লাহ, এর সুফল বাংলাদেশের মানুষ পাবে। এবং এই দেশে হারানো গণতন্ত্র আবার ফিরে আসবে।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।