১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে রাজনীতির পট পরিবর্তনের পর সেনাপ্রধান হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের মানুষদের এক মঞ্চে এনে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’ গঠ্ন করেন।
সামরিক শাসনের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া নতুন রাজনৈতিক দলে অন্তর্ভুক্ত হয় জাগদল, ন্যাপ (মশিউর), ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ক্যাপ্টেন হালিম), মুসলিম লীগ (শাহ আজিজ) ও লেবার পার্টি (মতিন)।
১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রপতি জিয়ার মৃত্যুর পর দলটির হাল ধরেন তার স্ত্রী খালেদা। এরপর তার ৩৪ বছরের নেতৃত্বে দুই বার ক্ষমতায় যায় বিএনপি।
বিএনপি গঠনের আগে প্রথমে ‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল-জাগদল’ এবং পরে ‘জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট’ গঠন করে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নিবার্চিত হন জিয়া।
দলের প্রতিষ্ঠাতার কবরপ্রাঙ্গণে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, “দেশ গণতন্ত্রবিহীন অবস্থায় চলছে। স্বৈরাচারী শাসকেরা জনগণের অধিকার হরণ করেছে। তারা বিরোধী রাজনৈতিক দল বিশেষ করে বিএনপির ওপরে নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়ে এই দলকে নির্মূল করে দিতে চায়।
“আমরা বলতে চাই, বিএনপি জনগণের সমর্থিত রাজনৈতিক দল, সেই কারণে বিএনপি কখনোই পরাজিত হবে না। বিএনপি প্রতিবারই বিভিন্ন বাধা উপেক্ষা করে প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এবারো ইনশাল্লাহ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণের সক্রিয় সহযোগিতায় আমরা অবশ্যই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে। এই হচ্ছে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শহীদ জিয়ার মাজারে আমাদের শপথ।”
জিয়ার কবরে ফুল দেওয়ার সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুল ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, আসম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, রুহুল আলম চৌধুরী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, কবির মুরাদ, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোমেন আলাল,খায়রুল কবীর খোকন, ফজলুল হক মিলন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিলেন, মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, হাফেজ আবদুল মালেক ও রফিকুল ইসলাম মাহতাব।
নেতা-কর্মীরা ‘শুভ শুভ জন্মদিন, বিএনপির জন্মদিন’, লও লও লও সালাম, জিয়া তুমি লও সালাম’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ভোরে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কাযার্লয় ও গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এছাড়া দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে।