প্রতি মাসে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার আমদানি খরচ হিসেবে এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় ৯ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ১০০ কোটি ডলারের নিচে নেমে এলে ভাবমূর্তি নষ্ট হবে বলে ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল বাকি রাখতে বাধ্য হয়েছিল বাংলাদেশ।
১৬ বছরের মাথায় সেই রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।এই হিসেবে গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের রিজার্ভ বেড়েছে ৩১ গুণ।
চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং রপ্তানি আয় কম আসার পরও রিজার্ভ বাড়ার কারণ কী?
প্রশ্নের উত্তরে অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমদানিও কমেছে। সে কারণেই রিজার্ভের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে।”
রিজার্ভ থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ খোয়ানোর পর নানা ধরনের সমালোচনার মধ্যে তা ৩১ বিলিয়ন ডলানোর ঘটনাকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবেই দেখছেন অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শেষদিকে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি নেমে এসেছিল।
এরপর বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন রিজার্ভে ছিল ১ বিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি। তখন আকুর বিল বাবদ ২০ কোটি ডলার পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তাতে রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসত।
রিজার্ভ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে, বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফসহ দাতাদের সহায়তা পাওয়া যাবে না- এই বিবেচনায় আকুর দেনা পুরোটা শোধ না করে অর্ধেক দেওয়া হয়েছিল তখন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই একবারই আকুর বিল বকেয়া রাখা হয়েছিল বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। বাংলাদেশকে দুই মাস পরপর পরিশোধ করতে হয় আকুর বিল।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৪ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৫২ শতাংশ কম।
তবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি আয় প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছিল।
কিন্তু ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয় কমেছে ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
আর রেমিটেন্স কমেছে ২৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
তবে জুলাই মাসের আমদানির তথ্য এখনও প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।