খোলা বাজার২৪, বুধবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬: রাজশাহীর তানোরে দেশের প্রসিদ্ধ কোম্পানির নকল ও নিম্নমাণের বৈদ্যুতিক তার, এনার্জি বাল্ব, হোল্ডার, সকেট এবং মাল্টিপ্লাগসহ বিভিন্ন প্রকারের নিম্নমাণের বৈদ্যুতিক পণ্য সামগ্রীতে বাজার সয়লাব হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে পল্লী বিদ্যুতের এক সময়ের অনুমোদিত একশ্রেণীর ডিলার এসব পণ্য সামগ্রী সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফা হওয়ায় এসব নিম্নমাণের বৈদ্যুতিক পণ্য সামগ্রী বিক্রিতে তারা বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ফলে প্রতিনিয়ত নিম্নমাণের এসব পণ্য সামগ্রীর বিক্রি বাড়ছে। এসব বৈদ্যুতিক পণ্য সামগ্রী আসল ? নকল ? না ? নিম্নমাণের সেটা বোঝার ক্ষমতা নাই সাধারণ মানুষের। সাধারণ মানুষের এই সরলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে এসব ব্যবসায়ীরা নিম্নমাণের বৈদ্যুতিক পণ্য সামগ্রী বেশি দামে তাদের কাছে বিক্রি করছে। এদিকে এসব নিম্নমাণের বৈদ্যুতিক পণ্য সামগ্রী কিনে ক্রেতারা একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি বৈদ্যুতিক (সর্টসার্কিট) দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও লাইনম্যানগণ আর্থিক সুবিধা (কমিশন) পওয়ার আশায় সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের এসব নিম্নমাণের বৈদ্যুতিক পণ্য সামগ্রী কিনতে বাধ্য করছেন। গ্রাহকগণ বিদ্যুতের যে কোনো সমস্যা নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের কার্যালয়ে গেলে সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিদ্রিষ্ট (ডিলার) দোকানে তাদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক নিদ্রিষ্ট দোকান থেকে বিদ্যুৎ সামগ্রী না কিনলে সময় মতো কাজ না করা, অহেতুক ক্রটি দেখানো ও বিভিন্ন কৌশলে গ্রাহককে হয়রানি করা হচ্ছে। ফলে গ্রাহকগণ তাদের মনোনিত দোকান থেকে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে নিম্নমাণের বৈদ্যুতিক পণ্য সামগ্রী কিনতে বাধ্য হচ্ছে। এসব ব্যবসায়ীরা পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-বর্মচারীদের দেয়া কমিশনের টাকা আদায়ের জন্য গ্রাহকের কাছে নিম্নমাণের সামগ্রী দিয়ে উচ্চ মূল্য দাম নিচ্ছেন। তানোরে বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও যেনো দেখার কেউ নেই। তানোর পৌর সদরের কথা ইলেক্ট্রনিক্স, মুন্ডুমালা পৌর সদরের অভি ইলেক্ট্রনিক্স ও চৌবাড়িয়া হাটের রিনা ইলেক্ট্রনিক্স এলাকায় এসব নকল ও নিম্নমাণের ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রি করেন বলে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রচার রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার ইলেক্ট্রনিক্স দোকান গুলোতে ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাধ্যমে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হলে এসব অনিয়ম বহুলাংশে হ্রাস পাবে। এব্যাপারে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি তানোর এরিয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা (এজিএম) বলেন, এসব দেখা তাদের দায়িত্ব নয়, তবে কারো বিরুদ্ধে সুনিদ্রিষ্ট অভিযোগ পেলে তারা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখবেন বলে তিনি জানার। এব্যাপারে তানোর পৌর সদরের মেসার্স কথা ইলেক্ট্রনিক্স’র স্বত্ত্বাধিকারী শরিফুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুন্ন করতে একটি মহল এসব অপপ্রচার করছে। এব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও মেসার্স অভি ও রিনা ইলেক্ট্রনিক্স’র দায়িত্বশীল কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।