খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬: সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডবাসীর উদ্যোগে স্থানীয় হাসাউড়া বাজারে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় এলাকায় সন্ত্রাস ও সম্প্রীতি নষ্টকারী জগন্য দালাল চাঁদাবাজ ফারুক মিয়া ও আঞ্জব আলীকে আটক করার দাবী জানানো হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় “শান্তি ও একতার সভা”নামে অনুষ্টিত ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মন্নান। ফারুক ও আঞ্জব আলীগংদের নেতিবাচক কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী,মানিক মিয়া, সাবেক মেম্বার পদপ্রার্থী নিতাই চান দাস,দর্প গ্রামের বর্তমান মেম্বার আরব আলী,সালিশী চান মিয়া সরকার,কামাল চৌধুরী,নূর আলম মিয়া,সাবেক মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মমিনসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।
সভায় হাসাউড়া গ্রামের প্রবীণ আওয়ামীলীগ কর্মী হাবিব উল্লাহ মুন্সীর পুত্র ব্যাবসায়ী মফিজ মিয়া জানান,বুধবার বিকেল ৫টায় হাসাউড়া বাজারস্থ কাপড়ের দোকানে বসে ব্যাবসা পরিচালনা করা অবস্থায় হঠাৎ করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ২ জন দারোগা আমাকে ওসি সাহেবের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসলে আমি তাদের সাথে থানায় চলে যাই। পরে আপনারা এলাকাবাসী জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের মাধ্যমে আমাকে থানা হাজত থেকে ছাড়িয়ে আনেন। আমাকে জেএমবি সদস্য অপবাদ দিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে যারা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলো এরা হচ্ছে আমাদের গ্রামের মোস্তফা মিয়ার পুত্র ফারুক মিয়া ও মৃত খুরশেদ আলীর পুত্র আঞ্জব আলী। আমাকে আটককারী ২ দারোগার মোবাইল ফোনেও তাদের নাম্বার পাওয়া গেছে। এরা আমার ন্যায় এলাকার আরো অনেক নিরীহ মানুষের ক্ষতিসাধন করতে পারে। তাই এলাকাবাসী সাবধান। ব্যাবসায়ী মফিজ মিয়া সভায় উপস্থিত এলাকার প্রায় ৪ শত গন্যমান্য লোকদেরকে বিষয়টি জানাতে ও বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হারুন অর রশীদ চৌধুরী বলেন,উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ব্যাবসায়ী মফিজ মিয়াকে থানায় ঢেকে আনা হয়। তার বিরুদ্ধে জেএমবি বা নাশকতার কোন প্রমাণ না পাওয়ায় এলাকার গন্যমাণ্য ব্যাক্তিবর্গ ও আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের অনুরোধে আবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তাকে সসম্মানে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে কেউ যদি তাকে অন্যায়ভাবে হয়রানী করে থাকে তাহলে তারা যেই হউকনা কেন তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী অভিযোগ দায়ের করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যাবস্থা গ্রহন করবো। জানা যায়,রঙ্গারচর ইউনিয়নের সাবেক যুবদল কর্মী সন্ত্রাসী ফারুক মিয়া নিজেকে ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য পরিচয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কল করে নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মী পরিচয় দিয়ে ব্যাবসায়ী মফিজ মিয়াকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির নেতা মহিবুর রহমান বলেন,ফারুক ইউনিয়ন বা উপজেলা যুবলীগের কোন কমিটির সদস্য নয়। রঙ্গারচর ইউনিয়ন বিএনপি নেতারা বলেন,গত ২০১৩ সালে ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির কাউন্সিলে ফারুক সভাপতি পদে প্রার্র্র্র্র্থী হয়ে মাত্র ৪ ভোট পেয়ে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। পরে সে জাতীয় পার্টিতে যোগদানের চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়। বর্তমানে সীমান্ত এলাকায় স্মাগলিং ব্যাবসা করে শহরে ভারতীয় মদ ও হেরোইন পাচার ব্যাবসায় নেমেছে বলে আমরা আর তাকে কোন দলীয় কর্মকান্ডে স্থান দেইনা।
জানা যায়, জোরপূর্বক মদের বোতল দিয়ে বিজিবির কাছে একই বাজারের ব্যাবসায়ী পবিত্র কুমার পালকে ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে দালাল ফারুক এর বিরুদ্ধে ভূক্তভোগী ব্যাবসায়ী পবিত্র কুমার পাল বাদী হয়ে গত ৩১/৮/২০১৬ইং তারিখে আমলগ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিআর মোকদ্দমা নং ৩৮৫/২০১৬ দায়ের করেন। বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৩৮৫/৩৮৬/৩৮২/৫০৬/৩৪ ধারায় বিজ্ঞ আদালতে দায়েরকৃত মামলাটি সুনামগঞ্জ সদর থানার এস আই সাইদুজ্জামানের কাছে তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কুৎসা রটনাসহ পত্রিকায় খুনের হুমকী দিলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা শাখার সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মেম্বার অরুন তহবিলদার চাঁদাবাজ ফারক মিয়ার বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই জিডির অভিযোগটি সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই মোশাররফ হোসেনের কাছে তদন্তাধীন রয়েছে। এলাকাবাসী আরো জানান,কারিতাস সংস্থার হাসাউড়া শিক্ষাকেন্দ্রের একজন শিক্ষিকাকে উত্যেক্ত করার ঘটনায় হাসাউড়া নিবাসী আল আমিন বাদী হয়ে বখাটে ফারুকের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় জিডি নং ৭৯৭ তাং ১৮/১০/২০১৪ইং দায়ের করেন। পরে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও থানা পুলিশের কাছে লিখিত মুছলেকা দিয়ে রেহাই পায় বখাটে ফারুক। ৫ বছর আগে হাসাউড়া গ্রামের এক সংখ্যালঘু মেয়েকে ইভটিজিং করলে এলাকার সামাজিক সালিশে তাকে তিরস্কার করা হয়। বঙ্গলীগ নামের একটি সংগঠনের নাম পদবী ব্যাবহার করে স্যানিটারী ল্যাট্রিন প্রদানের কথা বলে ৫ শত টাকা ও নলকুপ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েকটি পরিবারের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা নেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন পরিবারকেই স্যানিটারী ল্যাট্রিন বা নলকূপ (টিউবওয়েল) প্রদান করেনি সে। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতারের দাবী এখন গণদাবীতে পরিণত হয়েছে।