Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

34মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী শিলাই গ্রামে একাধিক ডাকাত চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিলাই গ্রামটি এক সময়ের নদীভাঙ্গা গ্রাম ছিল। গ্রামটির দক্ষিন পাশে রয়েছে পদ্মার নদীর শাখা নদীটি যা দিঘিরপাড়, টংগীবাড়ী উপজেলার হাশাইল, লৌহজংয়ের কলমা, গাওদিয়া, শিমুলিয়া হয়ে মূল পদ্মা নদীতে মিশেছে। অপরদিকে শিলই গ্রাম থেকে শুরু করে বাংলাবাজার, কালিরচর হয়ে মেঘনা নদীর মোহনা চাঁদপুরের পয়েন্টে সংযোগ হয়েছে। আর নদী তীরবর্তী এসব গ্রামগুলোর সাধারন মানুষ সব সময় ভয় আর আতংক নিয়ে দিন কাটায়।

নদীভাঙ্গা এসব গ্রামগুলোতে প্রায় ১০টি সক্রিয় ডাকাত চক্র প্রতিনিয়ত নদী এবং নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ডাকাতি করে আসছে। এতে করে একটু স্বাবলম্ভী, বৃত্তবান, কিংবা বিদেশ ফেরত/ প্রবাসীদের বাড়ীগুলো টার্গেট করে ডাকাতি করে সর্বস্থ কেরে নিচ্ছে চক্রটি। ডাকাতরা এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্র-ছায়ায় থাকার কারনে গ্রামবাসীরা এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কিংবা থানায় অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেনা। এমনটাই জানিয়েছেন শিলই গ্রামের একাধিক ভুক্তভোগী পরিবার। শিলাই গ্রামের সক্রিয় ডাকাত দলের অন্যতম সদস্যরা হলেন, জাকির খাঁন, মাসুম, কালাই ডাকাত, হেলাল দেওয়ান। কয়েক মাসে এই চক্রটি বিভিন্ন সময় নদীতে একাধিবার ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।

শিলই গ্রামের জোহরা বেগম বলেন, এই ডাকাত গ্রুপটি শিলই এরাকার কবির দেওয়ান, মনির পরমানিক, আসাদ বেপারীসহ প্রায় ৫-৬ টি বাড়ীতে দূর্ধর্ষ ডাকাতি করেছিল। সম্প্রতি শিলই গ্রামের নজরুল ভূইয়ার বাড়ীতে গত- সোমবার গভীর রাতে ডাকাতি করে সর্ব কিছু লুটে নেয়।

নজরুল ভূইয়ার ছেলে কবির জানান, ডাকাতরা সোমবার গভীর রাতে আমাদের বসত ঘরে ঢুকে প্রথমে আমাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। পরে একে একে ঘরে থাকা সকলকে হাত পা বেঁধে অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতি করে। কোন ডাক চিৎকার যেন না করতে পারি সেজন্য অস্ত্রের সাথে মুখ বেঁধে রাখেন। তিনি আরো বলেন, এ সময় ডাকাতরা আমার ঘরের স্টিলের আলমারি ভেঙ্গে নগদ ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, ৬ ভরি স্বর্নালংকার, এবং আমি বিদেশ থেকে দুটি দামি ক্যামেরা এনেছিলাম সেটাও তারা নিয়ে যায়। তাছাড়া ডাকাতরা আমাদের ঘরে ব্যাপক ভাংচুর করে।

নজরুল ভূইয়ার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, ডাকাতরা আমার গলায় ছুরি ধরে রাখে আমি একটু নড়াচড়া করার চেষ্টা করলে তারা আমার হাতে চাকু দিয়ে পোঁছ মারে এতে আমার হাত কেঁটে যায়। ডাকাতরা সকলে এলাকার তবে সবার মুখে কাপড় ছিল । যাওযার সময় আমি একজনকে চিনে ফেলি তার নাম কালাই ডাকাত।
ঘটনার পর দিন নজরুলের ছেলে কালাই এর বাড়ীতে গিয়ে ঘটনার কথা জানতে চাইলে তার কথাবার্তা সন্ধেহজনক মনে হয়। তাৎক্ষনিক থানায় এসে পুলিশকে জানালে পুলিশ কালাইকে আটক করে। কালাই ডাকাতের সুত্র ধরে সহযোগী আরো ৩ ডাকাত জাকির, হেলাল ও মাসুমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

শিলই এলাকার কবির দেওয়ান বলেন, কয়েক মাস আগে আমার বাড়ীতে ডাকাতি হয়েছিল। আমি কোন বিচার পাইনি। এখন ভয় আর আতংক নিয়ে দিন কাটাচ্ছি।

স্থানীয় মেম্বার বাসেদ জানান, ঘটনার পর পর বিষয়টি এলাকার চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। আমি আগে বুঝতে পারতাম না কারা এলাকায় ডাকাতি করিত। কালাই ডাকাত আটক এবং তার দেওয়া তথ্যমতে আরো ৩ জন আটক হওয়ায় পর বুঝতে পারলাম এলাকায় স্থানীয়রএলাকা ডাকাতি করে আসছে।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউনুচ আলী বলেন, ডাকাতির সাথে জড়িত ৪ জনকে নিয়মিত মামলা দিয়ে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। এদের সাথে আরো যারা জড়িত আছে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।