মহান ত্যাগের মহিমায় উদ্ভসিত হয়ে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে সারাদেশে মঙ্গলবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে।
ঈদের জামাতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি কামনা করে দোয়াসহ জঙ্গিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে সবাইকে সামিল হওয়ার আহ্বাান জানানো হয়।
তবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এবার ঈদের জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি কম ছিল।
মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে মুসলিমরা তাদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপন করে। ঘরে ঘরে ত্যাগের আনন্দে মহিমান্বিত হয়েছে মন।
সকালে ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের জন্য সারাদেশের মুসল্লিরা স্থানীয় ঈদগাহ বা মসজিদে সমবেত হন। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে নিজের পাপমোচন এবং পরিবার-পরিজন, দেশ ও মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া চেয়ে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন।
এরপর হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ভেতরের পশুত্বকে পরিহার ও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করেন তারা।
ঢাকায় সকাল ৭টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে এবার মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম।
সকাল ৮টা ৫ মিনিটে ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ঈদের জামাত শুরু হয়। নামাজে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান।
রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ, মন্ত্রিসভার সদস্যরা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেন।
নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এদিকে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজহার ১৮৯তম জামাত শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি কম ছিল। জামাতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি কামনা করে দোয়াসহ জঙ্গিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে সবাইকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ।
এছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ, মাগুরা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, দিনাজপুর, পটুয়াখালি, মুন্সীগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, বগুড়া, নাটোর, জামালপুর, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, নারায়নগঞ্জ, ফেনী, যশোরসহ সারাদেশের জেলা উপজেলায় যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, ও সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।