সামরিক সাহায্য প্যাকেজের আওতায় ১০ বছরে ইসরাইলকে রেকর্ড ৩৮০০ কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেকোন দেশকে দেয়া এটিই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক সহায়তা। এমনকি বিদেশী সাহায্যের মোট বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি এ অর্থ। ১০ বছরে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে ইসরাইলের প্রতিরক্ষায়। বিনিময়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুকে কিছু ছাড় দিতে হয়েছে। এ খবর দিয়েছে দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। খবরে বলা হয়, এ চুক্তির আওতায় মার্কিন কংগ্রেসের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোন সাহায্য চাওয়া হবে না বলে অঙ্গিকার করেছে ইসরাইল। ২০২০ সাল থেকে শুরু হওয়া এ অর্থায়নের ২৬.৩ শতাংশ ব্যয় করতে হবে আমেরিকার তৈরি সমরাস্ত্র কিনে।
খবরে বলা হয়, ২০১৮ সালে শেষ হওয়া বিদ্যমান চুক্তির আওতায় বার্ষিক ৩১০ কোটি ডলার পায় ইসরাইল। কিন্তু বর্তমান চুক্তিতে তা বেড়ে ৩৮০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বার্ষিক ৪৫০ কোটি ডলার চেয়েছিলেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ওয়াশিংটনে রয়েছেন ইসরাইলের প্রধান সমঝোতাকারী জ্যাকব ন্যাগেল। হোয়াইট হাউজও কংগ্রেস সদস্যদের এ চুক্তির ব্যাপারে ব্রিফিং দিতে শুরু করেছে।
গত ১০ মাস ধরে এ সমঝোতা চলে। তবে এ সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দ্বন্দ্ব ছিল তীব্র। বিশেষ করে গত বছর ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে দুই মিত্র দেশ ঝঞ্ঝাটে জড়ায়। গত বছর এনএসএ’র নজরদারিতে দেখা যায়, নেতানিয়াহু ইসরাইলপন্থী মার্কিন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানদের ইরান চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বলছিলেন। এছাড়া ফিলিস্তিনিদের প্রতি ওবামা প্রশাসনের নরম মনোভাবও ইসরাইলের পছন্দ হয়নি। ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে নতুন করে ২৮৪টি নতুন গৃহ নির্মানে ইসরাইলের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। সম্প্রতি ফেসবুকে নেতানিয়াহুর এক বার্তারও তীব্র সমালোচনা করে ওবামা প্রশাসন। ওই বার্তায় নেতানিয়াহু দাবি করেন ফিলিস্তিনিরা ইহুদীদের ‘জাতিগতভাবে নির্মূল’ করতে চায়। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এলিজাবেথ ট্রুডো এ মন্তব্যকে ‘অযথাযথ ও অ-সহায়ক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ইসরাইলের ‘বসতিস্থাপন নীতি পশ্চিম তীরের ব্যাপারে দেশটির দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্যের ব্যাপারে সত্যিকারের প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।’
তবে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিতে সম্মত হলেও, রিপাবলিকান পার্টি ওবামার বিরুদ্ধে ইসরাইলের নিরাপত্তার দিকে পর্যাপ্ত মনোযোগ না দেয়ার অভিযোগ তুলেছে। পাশাপাশি ইসরাইলি নেতার সঙ্গে বেশি কঠোর আচরণ করারও অভিযোগ উঠেছে। তবে হোয়াইট হাউজ এ বক্তব্য কড়াভাবে অস্বীকার করেছে।