Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

62মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে শুক্রবার ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা লাখো মানুষের ভিড় ছিল। পরিবহন সংকটের কারণে ঢাকায় ফেরা যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। এদিকে দৌলতদিয়া ঘাটে পদ্মা পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে সহস্রাধিক যানবাহন। এতে আট কিলোমিটার সড়কজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
ঢাকায় কর্মস্থলে ফেরা খুলনার গার্মেন্ট কর্মী শিউলী আক্তার, আম্বিয়া খাতুন, যশোরের মনির হোসেন, রাজবাড়ীর মনিকা আক্তার, ফরিদপুরের জালাল উদ্দিন ও বরিশালের আসলাম শেখ জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার সময় পাটুরিয়া ঘাটে এসে ফেরি পারাপারের জন্য ১৪-১৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ কারণে তারা ঘাটে যানজটের আশঙ্কায় আগেই কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু বেলা ১১টায় পাটুরিয়া ঘাটে এসে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোনো বাসে উঠতে পারেননি তারা।
আরও কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেন, স্বাভাবিক সময়ে নবীনগরের ভাড়া ৬০-৬৫ টাকা নেওয়া হলেও এখন দিতে হচ্ছে দুই থেকে আড়াইশ’ টাকা। যারা দ্বিগুণ ভাড়া দিতে পারছেন না তাদের ঘাটেই বসে থাকতে হচ্ছে।
শিবালয় বাস মালক সমিটির সভাপতি আলাল উদ্দিন আলাল জানান, যাত্রীদের কাছে থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার পর শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীদের বাড়তি চাপে জনজট দেখা দিয়েছে। এ সময় পরিবহন সংকটের কবলে পড়েছেন কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীরা। শিমুলিয়া ঘাটের বাসস্ট্যান্ডে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর গন্তব্যে রওনা হয়েছেন যাত্রীরা। এতে শিশু ও নারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন।
শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকে কাওড়াকান্দি ঘাটে ফেরি পারাপারে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন দেখা দিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের পদ্মা পাড়ি দিতে হয়েছে। এ সময় যানবাহনের চাপ সামাল দিতে শিমুলিয়া ঘাট থেকে অল্প যানবাহন নিয়ে অনেকটা খালি ফেরি কাওড়াকান্দি ঘাটে পাঠায় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ঘাটে যাত্রীদের তুলনায় নৌযান সংকটের কারণেও বিপুলসংখ্যক যাত্রীকে পদ্মা পাড়ি দিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকেও কিছু যাত্রী লঞ্চের অপেক্ষায় ঘাটে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এদিকে কাওড়াকান্দি ঘাটে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের প্রায় প্রতিটি পরিবহন কাউন্টারে গাড়ির অপেক্ষায় শিশু ও নারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। মাওয়া নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মোশারফ হোসেন জানান, কাওড়াকান্দি প্রান্তে অত্যধিক যানবাহনের চাপ থাকায় যানজট দেখা দিয়েছে।
এদিকে দৌলতদিয়ায় চলাচলকারী ১৯টি ফেরির মধ্যে ৪টি বন্ধ রয়েছে। আবার ৩টি রো-রো ফেরি তীব্র স্রোতের কারণে চলাচল করতে পারছে না। একদিকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, অন্যদিকে ঘাট, পন্টুন ও ফেরি সংকটের কারণে দৌলতদিয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের গোয়ালন্দ পৌর জামতলা এলাকা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় সিরিয়ালে আটকে থাকা বাসযাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহান। মহাসড়কে তীব্র যানজট থাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি ও অটোরিকশায় প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে গোয়ালন্দ বাজার আড়তপট্টি ও চর দৌলতদিয়া হয়ে বিকল্প সড়কে ঘাটে পৌঁছেন যাত্রীরা। কিন্তু ওই সড়কটি জরাজীর্ণ হওয়ায় যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হন। যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।