এম লুৎফর রহমান নরসিংদী : রেলওয়ের জমি অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য ঘোড়াশালে এক দুঃসাহসিক উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে রেলওয়ে এস্টেট বিভাগ। সরকারী দলের নেতাকর্মীদের হুমকি ধমকি ও বাধা উপেক্ষা করে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছেন রেলওয়ের বিভাগীয় এস্টেট অফিসার (উপ-সচিব) এসএম রেজাউল করিম। উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে ঘোড়াশাল স্টেশন এলাকার শতাধিক স্থাপনা বুল-ডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারী দলের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় একই দলের লোকেরা রেলওয়ের এসব জমি স্থায়ী অবৈধ দখলে নিয়ে গিয়েছিল।
জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের নরসিংদী জেলার ৮টি রেলস্টেশন এলাকায় রেলওয়ের কোটি কোটি টাকা মূল্যের জমি সরকারী দলের ছাত্র ছায়ায় থেকে প্রভাবশালী লোকেরা অবৈধভাবে দখল করে নেয়। এর মধ্যে ঘোড়াশাল দুটি স্টেশনের আশে পাশে রেলওয়ের মূল্যবান জমিতে গড়ে উঠে ৫৪২টি অবৈধ স্থাপনা। যুগযুগ ধরে এসব জমি অবৈধ দখলদাররা অবৈধভাবে ভোগ করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। পক্ষান্তরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ের এস্টেট বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার এস্টেট অফিসার এসএম রেজাউল করিম, সিও (রাজস্ব) এবিএম গোলাম মোস্তাফা ও কাননগো গোলাম নবী, সশস্ত্র রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয় বেঙ্গল পুলিশ সমন্বয়ে সকাল ১০ টায় ঘোড়াশালে অভিযান শুরু করে। খবর পেয়ে পলাশ উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ জাবেদ হোসেন ও ঘোড়াশাল পৌর মেয়র শরিফুল ইসলাম দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তারা উচ্ছেদ অভিযানে বাধা প্রদান করেন। তারা উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার জন্য রেলওয়ে এস্টেট অফিসারকে চাপ দেন। তারা বলেন, আমরা সহযোগিতা না করলে আপনি স্থাপনা ভাঙ্গতে পারবেন না। এতে পাল্টা জবাবে রেজাউল করিম বলেন, আপনরা কি ধরনের অসহযোগিতা করবেন। এ ধমকি পাল্টা ধমকি নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ জাবেদ ও মেয়র শরিফুল ইসলামের সাথে এস্টেট অফিসার এসএম রেজাউল করিমের বাগবিতন্ডা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সৈয়দ জাবেদ ও মেয়রের লোকেরা চিৎকার করে অভিযান বন্ধ করার জন্য চাপ দিলে রেজাউল করিম তাদেরকে গ্রেফতার করার হুমকি দেন। এতে উভয় নেতাই চুপসে যান। সাথে সাথে চুপ হয়ে যায় তাদের দলবল। এরপর তিনি বুল-ডোজার লাগিয়ে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ভাংচুর শুরু করেন। সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শতাধিক স্থাপনা ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়া হয়। এরপর বেলা ৪টা পর্যন্ত অভিযান চলে। সে সময় পর্যন্ত আরো কত সংখ্যক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে তার সংখ্যা জানা যায়নি।