মনিরুল ইসলাম পারভেজ,চট্টগ্রাম : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে এমন একটি রেস্টুরেন্ট হতে পারে তা ভাবতেই পারছেন না চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছয় দশকপূর্তি উপলক্ষে মিলনমেলায় যোগ দিতে মঙ্গলবার কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো হন অনেক সাবেক শিক্ষার্থী। কলেজের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই তাদের চক্ষু চড়কগাছ। অনেকেরই প্রশ্ন এটা কি করে সম্ভব হল। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় কোন্ যুক্তিতে ‘সিএমসি স্টুডেন্ট ক্যাফে’ নামের এই রেস্টুরেন্টের অনুমোদন দেয়া হল।
আলাপকালে একাধিক সাবেক শিক্ষার্থী পূর্বকোণকে বলেন, তারা এই মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করে বের হয়েছেন দুই থেকে তিন দশক আগে। তাদের সময় এখানে অনেক কিছুই ছিল না। বর্তমানে নতুন নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ হয়েছে। বেড়েছে সুযোগ-সুবিধা। অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তাতে তারা আনন্দিত। কিন্তু প্রধান ফটকের মুখে একটি রেস্টুরেন্ট কোনভাবেই মানায় না। এমনকি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাস্টারপ্ল্যানেও এই রেস্টুরেন্টটি ছিল না। অপরিকল্পিতভাবে একটি রেস্টুরেন্ট দিয়ে পুরো কলেজ ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছে। তাদের প্রশ্ন একটি একাডেমিক ভবনে রেস্টুরেন্টের নাম লেখা এত বড় সাইনবোর্ড কিভাবে স্থাপন করতে দিল কর্তৃপক্ষ। বড় বড় করে খাবারের ছবি কাকে আকৃষ্ট করার জন্য দেয়া হল ? নিশ্চয়ই হাসপাতালের রোগী এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার জন্য, যা কখনোই নীতি-নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না।
গতকাল সোমবার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, রেস্টুরেন্টটির ভিতরে-বাইরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবিসম্বলিত ব্যানার টাঙানো হয়েছে। অর্থাৎ রেস্টুরেন্ট ব্যবসার কাজেও বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা ওই রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেতে আসা লোকজনের নজর এড়ায়নি। নাসির উদ্দিন নামে এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে এনবিএসটোয়েন্টিফোরকে বলেন, বঙ্গবন্ধু কি এতই সস্তা হয়ে গেল। যত্রতত্র তার ছবি লাগানো হচ্ছে। জাতির পিতার প্রতি তাদের যদি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ থাকতো তাহলে রেস্টুরেন্টের ভিতরে সুন্দর করে তাঁর একটি ছবি কিংবা প্রতিকৃতি রাখা হতো। আবদুর রহিম নামে অপর এক ব্যক্তি বলেন, কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত রেস্টুরেন্টটি অপসারণ করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। রবিউর রহমান নামে এক রোগীর আত্মীয় বলেন, চট্টগ্রামের সরকার দলীয় নেতাদের উচিত বঙ্গবন্ধুর ছবির বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগ নেয়া। যারা একাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া।