
‘‘আট বছর আগে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’র ধারণা নিয়ে আসার পর থেকে পরিকল্পনায় সুউচ্চ দুষ্টি ও লক্ষ্য ছিলো কিভাবে এটি অর্জন করা যাবে অথবা যাবে না।’’
মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সম্মেলন কক্ষে সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের জন্য বাংলাদেশ ও ইউএন অফিসের উদ্যোগ আয়োজিত ‘সাউথ-সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশন ইন স্কেলিং আপ ইনোভেশন ইন পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
জয় বলেন, তখন সেবাসমূহ সহজ করা এবং ডিজিটাইজিং সার্ভিসের এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার নিজস্ব পদ্ধতি, নিজস্ব উদ্ভাবন দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, ‘সার্বিক লক্ষ্য ছিলো সরকারি সেবাসমূহ ডিজিটাইজ করা এবং মূল লক্ষ্য ছিলো সেবাসমূহ থেকে কিভাবে নাগরিকদের লাভবান করতে পারি। কিভাবে আমরা নাগরিক জীবন গড়ে তুলতে পারি এবং সরকারের সেবাসমূহ সহজ, সাশ্রয়ী, কার্যকর এবং আরো সহজতর করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, অনেক এলডিসিভুক্ত দেশ যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয়, সেদিকে তিনি ‘মুরগি এবং ডিম’ কোথা থেকে শুরু হবে- এ ধরনের সমস্যা বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সরকার তখন প্রত্যন্ত গ্রাম ও দুর্গম এলাকা এবং দ্বীপসমূহের নাগরিকদের কাছে এই সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে একটা সহজ ও সাশ্রয়ী খরচে এটা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি প্রত্যন্ত এলাকায় সহজে সস্তায় ও সাশ্রয়ী উপায়ে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার সার্ভিস পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে ওয়েব কাম স্কাইপ প্রবর্তনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে বাজেট সরকারের জন্য সব সময়ের একটা বড় সীমাবদ্ধতা, অতএব এ থেকে পরিত্রানের একটা উপায় ছিল সরকারি বেসরকারি অংশীদায়িত্ব (পিপিপি)।
এ প্রসঙ্গে জয় উল্লেখ করেন যে, দেশব্যাপী প্রতিটি ডিজিটাল সেন্টারে তিন বেসরকারি উদ্যোক্তা রয়েছে যারা ওইসব সেন্টার পরিচালনা করে এবং প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া ছাড়া সরকার তাদের কোন বেতন-ভাতা দেয় না।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু এখন দুর্গম গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের ওইসব সেন্টারে ভাল লাভ হচ্ছে এবং আমরা খুব দ্রুত অত্যন্ত কম বাজেটে এটা করতে সক্ষম হয়েছি।’
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা গ্লোবাল সাউথ-এর মধ্যে ব্যাপক উপলব্ধি সৃষ্টি এবং সরকারি সেক্টরের উদ্ভাবন বিনিময়ের লক্ষ্যে ‘সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক অব পাবলিক অর্গানাইজেশন্স’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।
অনুষ্ঠানের অন্যান্য বক্তারা দেশের আইসিটি সেক্টরের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বের উচ্চসিত প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে আইটিইউ মহাসচিব হুলিন ঝাও বলেন, শেখ হাসিনার অনন্য সাধারণ নেতৃত্বে আইসিটি সেক্টরে অনেক সাফল্য এসেছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ প্যানেল আলোচনায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন। মেক্সিকান এজেন্সি ফর ইন্টারনেশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশনের নির্বাহী পরিচালক মিস জিনা কাসার, জাতিসংঘ ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (সিডিএফ)-এর নির্বাহী সচিব যুডিথ কার্ল, জাতিসংঘ ডিইএসএ-এর ডিভিশন অব পাবলিক এডমিনিস্টেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট শাখার চীফ অব নলেজ ম্যানেজমেন্ট ভিনসেনজো একোয়ারো অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তৃতা করেন।
মহাসচিবের দূত এবং ইউএন অফিস ফর সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন এর পরিচালক জর্জ চেদিয়েক প্যানেল আলোচনায় ইতি টানেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে উগান্ডার দূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি এবং সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সভাপতি রিচার্ড নূহুরা অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তৃতা করেন।
সুইডেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসাবেলা লোভিন, ইউএনডিপির প্রশাসক হেলেন ক্লার্ক এবং ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব হোলিন ঝাও ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশে দূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। প্রধান বক্তা ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেসটু ইনফর্মেশন (এটুআই)-এর পলিসি এডভাইজার অনির চৌধুরী।
ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিনপো দামচো দর্জি, মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ অসীম, জাতিসংঘ ওএইচআরএলএলএস-এর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি আন্ডার সেক্রেটারী জেনারেল গায়েন চন্দ্র আচার্য এবং কাজাখস্তানের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী ইয়ারজন আশিকবায়েভ পাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।