Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

index

খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬: দেশের ১০ কোটি নাগরিককে মেশিন রিডেবল স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আগামী ২ অক্টোবর থেকে এই কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এই কার্ড বিতরণের কার্যক্রম উদ্বোধনের কথা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ আজ বাসসকে বলেন, নতুন এই স্মার্ট এনআইডি কার্ড দেয়ার সময় নির্বাচন কমিশন ১০ কোটি ভোটারের কাছ থেকে তাদের দুই হাতের ১০ আঙুলের ছাপ, আইরিশ বা চোখের মণির ছবি সংগ্রহ করবে।
তিনি বলেন, এনআইডির তথ্যভান্ডারে নাগরিকদের হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তর্জনীর ছাপ রয়েছে। ২০০৮ সালে ওই ছাপ সংগ্রহে অনেক ত্রুটি ছিল। সিম নিবন্ধনের সময় দেখা গেছে অনেকের আঙুলের ছাপ মিলছে না। নতুন করে দুই হাতের দশ আঙুলের ছাপ সংগৃহীত হলে এ সমস্যার সমাধান হবে। স্মার্ট কার্ডটি মেশিন রিডেবল হওয়ায় জালিয়াতির হাত থেকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করবে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামান আরজু জানান, আগামী ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে এই কার্ড উদ্বোধনের কথা রয়েছে। উদ্বোধনের পর ওইদিন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যদের কার্ড দেয়া হবে। পরদিন থেকেই ঢাকার ২ সিটি কর্পোরেশন ও কুড়িগ্রামের একটি দুর্গম এলাকার ভোটারদের মাঝে কার্ড বিতরণ করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে সারাদেশে উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে তা বিতরণ করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ৮ বছর আগে দেশের ৮ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮ জন নাগরিক প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার হয়। বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি। প্রথমবারের মতো ভোটারের মাঝে সাধারণ পাতলা কাগজে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করা জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়। অসাধু ব্যক্তিরা বিদ্যমান কার্ডটি সহজেই নকল করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। ফলে নাগরিক ভোগান্তি ও হয়রানি বাড়ছে। এসব জালিয়াতি রোধেই স্মার্ট কার্ড তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসি। এটি যন্ত্রে পাঠযোগ্য। অসাধু ব্যক্তিরা সহজেই নকল করতে পারবে না। ভোটারের বা পরিচয়পত্রধারীর আইডি নম্বর ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য এই কার্ডে সংরক্ষিত থাকবে। শুধুমাত্র যন্ত্রের সাহায্যে এসব তথ্য পাঠ করা যাবে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে কার্ডটি ফ্রি দেয়া হলেও পরপর দুবার হারালেই কার্ড সংগ্রহে ভোটারকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিতে হবে। এক্ষেত্রে কারো কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমে পুরনো কার্ডটি তুলে তা জমা দিয়ে স্মার্ট কার্ড নিতে হবে।
এ পরিচয়পত্রের মাইক্রোচিপে তিনটি স্তরে থাকছে ২৫ ধরণের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য। এতে ব্যাংকিং, টিআইএন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি ও সম্পত্তি কেনাবেচাসহ ২২ ধরণের নাগরিক সেবা নিতে পারবেন কার্ডধারীরা। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি রোধেও স্মার্ট কার্ড কাজ করবে।
নির্বাচন কমিশনের আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর ইনহ্যান্সিং অ্যাক্সেস টু সার্ভিসেস বা আইডিয়া প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালে স্মার্ট কার্ড তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ সুবিধা দিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ লাখ কার্ড বিতরণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ২০১৪ সালে যারা ভোটার হয়েছেন তাদের প্রথম পর্যায়ে স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে। আগামী বছরের জুন নাগাদ ১০ কোটি কার্ড তৈরি শেষে, ডিসেম্বরের মধ্যে সব ভোটারের হাতে তা পৌঁছাবে বলে কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানান।