Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
indexখোলা বাজার২৪, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬:প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্ভাব্য সব রাস্তা খতিয়ে দেখছেন। নির্বাচনের আগে বারবার জনসভায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দুর্বল কাশ্মীরনীতির সমালোচনা করেছিলেন মোদি। ক্ষমতা পেলে পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দেওয়ার অঙ্গীকারও ছিল মোদির ভাষণে। কিন্তু, কয়েকমাসের ব্যবধানেই প্রথমে পাঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এবং অতি সম্প্রতি উরির সেনা ছাউনিতে পাকিস্তানি সেনার মদতে কুখ্যাত জয়েশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরা যেভাবে রক্তের হোলি খেলা চালিয়েছে, তাতে ভারতকে আর বসে থাকলে চলবে না। একদিকে সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে যেমন নিশ্ছিদ্র করতে হবে, তেমনই প্রতিটি সেনা শিবিরের ভিতর ও বাইরের নিরাপত্তা বলয়ও ঢেলে সাজাতে হবে। সরষের মধ্যে ভূত থাকাও আশ্চর্যের নয়। পাঠানকোট ও উরির হামলা থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার, সেনাবাহিনীর ভিতরকার খবর কেউ বাইরে পাচার করছে। না-হলে উরির ওই সেনা ছাউনিতে যে দায়িত্ব বদল হচ্ছিল এবং তার দরুণ যে একটা আলগা ভাব ছিল, তা ওপারের জঙ্গিরা জানল কী করে?

পাঠানকোট হামলার নেপথ্যে যেমন কান্দাহার-কাণ্ডের মাসুদ আজহারের ছায়া দেখা গিয়েছে, তেমনই পাঠানকোট ও উরির হামলার ক্ষেত্রেও জয়েশ-ই-মহম্মদ প্রধানের সক্রিয় মদত ছিল বলেই জানা গিয়েছে। জঙ্গিদের সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল কুখ্যাত জয়েশ কমান্ডার রশিদ আসগর। এসব দেখেশুনেই মনে হয়, পাকিস্তান সরকার ও সেনার সক্রিয় মদত ছাড়া এ ধরনের ভয়ংকর হামলা কোনওভাবেই সম্ভব ছিল না। ভারত সরকারের উচিত, সমস্ত আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার পাশাপাশি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি শিবিরগুলি লক্ষ্য করে নিয়ন্ত্রিত হামলা চালানো।
ভারত রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র’ বলে আক্রমণ চালিয়েছে। আমেরিকার দুই কংগ্রেস সদস্যও পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসের মদতদাতা’ হিসাবে চিহ্নিত করতে গুরুত্বপূর্ণ বিল পেশ করেছে। যে দু’জন ওই বিল এনেছেন, তাঁদের মধ্যে টেড পো মার্কিন সন্ত্রাস সংক্রান্ত হাউজ সাব কমিটির চেয়ারম্যান। তাই আমেরিকাও যে পাকিস্তানের এই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে উদ্বিগ্ন এবং এরকম চললে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মদতপুষ্ট উগ্রপন্থীরা শুধু এই উপমহাদেশই নয়, সারা বিশ্বের শান্তি ও ঐক্যকে যে বিনষ্ট করে দেবে, তা বিশ্বনেতারা বিলক্ষণ জানেন। তাই আমেরিকায় রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় শুধু ভারত নয়, আমেরিকা নয়, ইউরোপেরও একাধিক দেশ পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করেছে। একথা ঠিক, বিশ্বজুড়ে যেভাবে পরমাণু শক্তি ও অস্ত্রের প্রসার ঘটেছে তাতে নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধ আর সেভাবে সম্ভব নয়। এখন যুদ্ধ মানেই সব পক্ষেরই বিনাশ অবশ্যম্ভাবী। বিশেষ করে পাকিস্তানের মতো দেশ, যেখানে রাস্তায় অবাধে জঙ্গিরা ঘুরে বেড়ায়, শিবিরে জঙ্গিদের অস্ত্র প্রশিক্ষণদানই যেখানে রাষ্ট্রের মূল নীতি, সেখানে ভারতের মতো পঞ্চশীল নীতিতে বিশ্বাসী শান্তিকামী রাষ্ট্রের পক্ষে সবদিক সামলে ইসলামাবাদকে উচিত শিক্ষা দেওয়া নিঃসন্দেহে কঠিন কাজ। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিত্ব ও দৃঢ়তার উপর দেশবাসীর অগাধ বিশ্বাস রয়েছে। মোদির ভারত নিশ্চিতভাবে পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষাই দেবে—এই বিশ্বাসকে বুকে করেই দেশবাসী প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে।