খোলা বাজার২৪,রবিবার,২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬: স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেওয়া ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর ২ হাজার ৩৬৭ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা-সংবলিত গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এই আবেদনের ওপর আগামী রোববার অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতির আদালতে শুনানি হতে পারে।
চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিশেষ গেরিলা বাহিনীর ২ হাজার ৩৬৭ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা-সংবলিত গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গতকাল শনিবার আবেদনটি করে।
আগামী সপ্তাহে এই আবেদনের ওপর শুনানি হবে বলে আশা প্রকাশ করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আজ রোববার তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের যেটি বলতে চেয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্তি সব সময় হয়েছে ব্যক্তিগত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। যেহেতু একটি সংস্থার তরফ থেকে কতগুলো নাম দিয়ে তালিকা দেওয়া হয়েছে, এটি ঠিক হয়নি। তালিকাভুক্তির নিয়ম হলো প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে আবেদন করতে হবে, সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দিতে হবে—এসব যুক্তিতে আবেদনটি করা হয়।
মাহবুবে আলম বলেন, অনেকে ভাবছেন, সব বাতিল হয়ে যাবে, ব্যাপারটি এমন নয়; ব্যাপারটি প্রক্রিয়াগত। যতটুকু শুনেছেন, ইতিমধ্যে অনলাইনে অনেকে ব্যক্তিগতভাবে আবেদন করেছেন, এগুলো বিবেচনাধীন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের ২২ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর ২ হাজার ৩৬৭ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করে। গেরিলা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার ও ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য কমরেড মণি সিংহ ও অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নাম ছিল এতে। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ওই তালিকা-সংবলিত প্রকাশিত গেজেট বাতিল করা হয়। তবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ওই তালিকা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে তালিকা বাতিলের ওই প্রজ্ঞাপনটি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে তালিকা বাতিলের ২৯ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিতও করা হয়। আবেদনকারী হিসেবে এতে পক্ষভুক্ত হন আরও ৩৩ জন মুক্তিযোদ্ধা। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।