Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


109036_558
খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬: সুন্দরবনের পাশে রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদুৎ প্রকল্প নির্মাণে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা বাতিলের জন্য ইউনেস্কোর সুপারিশকে সমর্থন করেছে জাতিসংঘ। সোমবার জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মহাসচিব বানকি মুনের মুখপাত্র ফারহান হক রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র  নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, ইউনেস্কো রিপোর্টের বাইরে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই।

ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ ম্যানগ্রুভ ফরেস্ট সুন্দরবনের পাশে বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী সরকার কয়লা ভিত্তিক একটি বিদুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এতে পরিবেশ ও প্রতিবেশ মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হবে বলে দেশি বিদেশি বিষেজ্ঞরা সতর্ক করলেও সরকার তা গ্রাহ্য করছেনা । এর ক্ষতির প্রভাব উল্লেখ করে রিপোর্ট দিয়েছে ইউনেস্কো।  একটি নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্প পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ধ্বংস করে দিতে পারে শিরোনামে সম্প্রতি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন
পোস্ট। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের অবস্থানকি?index

জবাবে ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক এক কথায় বলেন, এ বিষয়ে ইউনেস্কো রিপোর্টের বাইরে কোনো বক্তব্য নেই।

এদিকে সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করার জন্য বাংলাদেশের কাছে সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো । এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে তাতে সুন্দরবনের অপূরণীয় ক্ষতি হবে উল্লেখ করে প্রকল্পটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। গত মার্চে বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া ইউনেস্কো’র তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল সরকারকে দেওয়া প্রতিবেদনে এই অনুরোধ জানিয়েছে।shundor-ban20151127203834

ইউনেস্কো’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রামপাল প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা প্রতিবেদন (ইআইএ), প্রকল্পের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাওয়ার কোম্পানির বক্তব্য এবং দরপত্রের নথির মধ্যে বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে। প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশ সফরের সময় সীমিতসংখ্যক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তা কোম্পানির লোকেরা সংগঠিত করেছে।

images

প্রকল্প বাতিল করার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে ইউনেস্কো চারটি ঝুঁকির কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। ঝুঁকিগুলো হচ্ছে বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, জাহাজ চলাচল বেড়ে যাওয়া এবং প্রকল্প এলাকায় শিল্পকারখানা ও অবকাঠামো নির্মিত হলে পুঞ্জীভূত দূষণ।
এ ছাড়া রামপালের জন্য যে পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা করা হয়েছে, তা সঠিকভাবে হয়নি মন্তব্য করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবনের সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে বাজারে সহজলভ্য ও সবচেয়ে ভালো প্রযুক্তি আনা হচ্ছে না। সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক মানও বজায় রাখা হচ্ছে না।
রামপালে নির্মিতব্য ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুন্দরবনের বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা থেকে ৬৫ কিলোমিটার ও মূল সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বিদ্যুৎ প্রকল্পের কয়লার ছাই বাতাসে মিশে সুন্দরবনে দূষণ ঘটাবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত ছাইসহ দূষিত পানি বনের নদীতে পড়েও দূষণ ঘটাবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত দেড় শ বছরে সুন্দরবনের আয়তন অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে। এই বন থেকে লোনা পানি এলাকার হরিণ, বুনো মহিষ, জাভান জলহস্তী, হগ হরিণ, বনগরু ও মাগার কুমির বিলুপ্ত হয়ে গেছে।