মুন্সিগঞ্জ : টঙ্গীবাড়ী উপজেলার খিলপাড়া গ্রামের ৩টি ঐতিহাসিক স্থাপনাসহ প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ৩ একর ৭৭ শতাংশ অর্পিত সম্পত্তি জাল দলিল তৈরী করে অবৈধ আত্নসাৎতের পায়তারা চলছে।
ওই সম্পত্তির লিজধারী আঃ হামিদ ঢালী গং অবৈধভাবে দির্ঘদিন যাবৎ আত্নসাৎতের পায়তারা করে আসছে। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে গত ২২-০৯-২০১৫ইং তারিখে দুর্ণীতি দমন কমিশনের উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে আঃ হামিদ ঢালীসহ ৫ জনকে আসামী করে টঙ্গীবাড়ী থানায় মামলা নং ২৫(০৯)২০১৫ দায়ের করেন।
মামলার বাকি আসামীরা হলো, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে লাভলু, বাবুল হোসেন ঢালী, সোয়েব আক্তার ওরফে জুনিয়র, ফরিদা আক্তার ঝুমুর। তবে, মামলাটি দায়েরের পর ২ লক্ষ টাকা উৎকোচের বিনিময়ে দুর্ণীতি দমন কমিশনের উপসহকারী পরিচালাক তদন্তকারী কর্মকর্তা একরামুল রেজা ওই মামলার ১নং আসামী হামিদ ঢালী এবং ফরিদা আক্তার ঝুমুরের নাম চার্জশিট হতে বাদ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই এলাকার মানুষের মনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বর্তমানে ওই মামলাটি মুন্সিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন আছে।
জানাগেছে, খিলপাড়া মৌজার সিএস ও এসএ ৬০,৬১,৬২,৬৩,৬৪,৮১ ও ৫৬ দাগের ৩ একর ৭৭ শতাংশ অর্পিত সম্পত্তি লিজ নিয়া দির্ঘদিন যাবৎ ভোগ দখল করছেন হাতেম বেপারী এবং হামিদ ঢালী। কিন্তু ৩০মে ২০০০ ইং তারিখে ওই সম্পত্তির সিএস মালিক শ্রী অক্ষয় কুমার মুখোপাধায় এর কাছ হতে জোত পত্তন নেন উপজেলার বড় ছটফটিয়া গ্রামের মৃত ইব্রাহিম পরামানিক উল্লেখ করে পত্তন মূলে ভূয়া দাতা দেখিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ফরিদা আক্তার ঝুমুরকে গ্রহিতা দেখিয়ে আম-মোক্তার নামা দলিল নং ৯২৭ তৈরী করা হয়।
পরবর্তীতে উক্ত আম-মোক্তার নামা দলিল মূলে টঙ্গীবাড়ী সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল নং ১০২৬ দানপত্র দলিল মূলে ১২ই জুন ২০০০ইং তারিখে উক্ত সম্পত্তি ফরিদা আক্তার ঝুমুর তার ৩ ভাই এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামী জাহাঙ্গীর আলম ওরফে লাভলু, বাবুল হোসেন ঢালী এবং সোয়েব আক্তার ওরফে জুনিয়র এর নামে দান পত্র দলিল তৈরী করেন। ওই জাল দলিলের মাধ্যমে এই বিশাল সম্পত্তির মালিকানা নিজেদের দাবী করে ওই ৩ ভাই সরকারী সম্পত্তি লিজ অবমুক্তি করার জন্য দরখাস্ত করেছেন। মৃত ইব্রাহিম পরমানিক ১৯৩০ সালে ওই সম্পত্তি পত্তন মূলে মালিক দেখিয়ে আম-মোক্তার নামা তৈরী করা হলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইব্রাহিম পরমানিক এর জন্ম ১৯২৭ সালে।
৩ বছর বয়সে কিভাবে পত্তন মূলে সম্পত্তি মালিক হওয়া যায় এ নিয়ে এলাকায় বিভিন্ন মুখরোচক আলোচনা শুনা যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্ণীতি দমন কমিশনের উপ-সহকারী পরিচালক একরামুল রেজা এর সাথে যোগাযোগ করা হলে সে জানায়, জাল দলিল তৈরী করে সরকারী অর্পিত সম্পত্তি নিজেদের দাবী করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি মুন্সিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারধীন আছে।
২ লক্ষ টাকা উৎকোচ নিয়ে ২ আসামীর নাম চার্জশিট হতে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে সে জানায়, আমরা শুধু যাচাই বাছাই করে রির্পোট দেই কমিশন চার্জশিট দেয়। চার্জশিটের বিষয়টি একান্তই কমিশনের ব্যাপার। আপনি ২ লক্ষ টাকা নিয়ে ২ আসামীর নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়ার জন্য কমিশনে রির্পোট করেছেন এ ব্যাপরে এলাকার একাধিক লোক অভিযোগ করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে সে জানায়, ১ কোটি লোক অভিযোগ করলেও আমার কিছু যায় আসে না।