খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৬ : পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। দেশে ৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষ সিগারেট, বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করেন। যা দেশের ৪৩ শতাংশ। বছরে ১ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে মৃত্যুবরণ করেন।
রাজধানীর মিরপুরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক দিনব্যাপী এক কর্মশালায় বক্তারা এ সব কথা বলেন।
স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন। তিনি বলেন, ২০৪০ সালের আগেই বাংলাদেশ তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য পূরণ সফল হবে। মানুষ যে হারে সচেতন হচ্ছে, এই সচেতনতাই আমাদের তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন আছে। নিরুৎসাহিত করতে আমরা এই সেক্টরে ট্যাক্স বাড়িয়েছি। মানুষের সচেতনতা এখন অনেক বেশি। দেখবেন যানবাহনে, হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ যেখানে-সেখানে এখন আর কেউ ধূমপান করেন না।
তিনি বলেন, আমাদের পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার সারদায় আমাদের পুলিশ কর্মকর্তাদের সকল ক্রিমিনাল আইন পড়ানো হয়। সেখানে নৈতিক শিক্ষাও দেওয়া হয়। তখন ধূমপান বিরোধী আইন পড়ানো হয়।
মূল প্রবন্ধে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমাদের প্রয়াস।
বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের ক্ষতির দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, তামাকজাত দ্রব্য সেবনের উচ্চহার অকাল মৃত্যু এবং চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি করে। প্রতি বছর তামাক ব্যবহারজনিত অসুখে ১ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে ধূমপানজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এছাড়া ক্যান্সারজনিত মৃত্যু ৩৮ শতাংশ, ফুসফুসের যক্ষায় ৩৫ শতাংশ ও শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগে ২৪ শতাংশ মারা যায়।
বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার বিষয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। দেশে ৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষ সিগারেট, বিড়ি ও ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করেন। যা দেশের ৪৩ শতাংশ।
কিশোর কিশোরীদের তামাক আসক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সের প্রায় ৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরী তামাকপণ্য ব্যবহার করে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিকের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি ডা. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, অধ্যাপক এম এ রাশিদ, অধ্যাপক মোল্লা ওবাইদুল্লাহ বাকি, অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আওয়াল রিজভী প্রমুখ।