খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৬ : উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে। রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইরিশের প্রতিচ্ছবি এবং দশ আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে নিজের ‘স্মার্টকার্ড’ নেওয়ার মধ্যে দিয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
দেশের প্রায় ১০ কোটি ভোটারের মধ্যে মোটামুটি নয় কোটির হাতে লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। তাদের সেই পুরনো পরিচয়পত্র ফিরিয়ে নিয়ে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর সোমবার থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এবং প্রত্যন্ত এলাকা কুড়িগ্রামে এই কার্ড বিতরণ শুরু হবে।
যে যে সেবা পাওয়া যাবে স্মার্টকার্ড দিয়ে:
১। আয়কর দাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি
২। ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর প্রাপ্তি ও নবায়ন
৩। পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও নবায়ন
৪। চাকরির জন্য আবেদন
৫। স্থাবর সম্পত্তি কেনা-বেচা
৬। ব্যাংক হিসাব খোলা ও ঋণ প্রাপ্তি
৭। সরকারি বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন
৮। সরকারি ভর্তুকি,
৯। সাহায্য, সহায়তা প্রাপ্তি
১০। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি
১১। বিমানবন্দরে ই-গেইট এর মাধ্যমে আগমন ও বহির্গমন সুবিধা
১২। শেয়ার আবেদন ও বিও অ্যাইকাউন্ট খোলা
১৩। ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি
১৪।যানবাহন রেজিস্ট্রেশন
১৫।বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন
১৬। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংযোগ গ্রহণ
১৭। মোবাইল ও টেলিফোন সংযোগ গ্রহণ
১৮।বিভিন্ন ধরনের ই-টিকেটিং
১৯।সিকিউরড ওয়েব লগ ইন
২০।ই-ফরম পূরণে নাগরিকের সঠিক ও নির্ভুল তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোজনের কাজে ১০ ডিজিটের এই স্মার্টকার্ড ব্যবহার করা যাবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য জানাতে একটি হেল্প ডেস্ক খুলেছে এআইডি উইং। যে কোনো ফোন থেকে ১০৫ নম্বরে কল করে নাগরিকদের তথ্য জানাবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিভাগের কর্মকর্তারা।
এই কার্ডের চিপে (তথ্যভান্ডার) নতুন এই দুই তথ্য ছাড়াও ভোটার হওয়ার সময় প্রত্যেক নাগরিকের দেওয়া কমপক্ষে আরও ১৬টি তথ্যও সংরক্ষিত থাকবে।
পুরোনো ৩১টি তথ্যের মধ্যে অবশ্যই দিতে হবে—এমন তথ্য ১৬টি। এগুলো হলো ব্যক্তির নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, পেশা, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বয়স, বৈবাহিক অবস্থা, জন্মতারিখ, রক্তের গ্রুপ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, লিঙ্গ, জন্মস্থান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দৃশ্যমান শনাক্তকরণ চিহ্ন, ধর্ম। এ ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট নম্বর, আয়কর সনদ নম্বর, টেলিফোন ও মোবাইল নম্বর, মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, স্বামী বা স্ত্রীর নাম ও পরিচয়পত্র নম্বর থাকলে এবং মা-বাবা, স্বামী বা স্ত্রী মৃত হলে সে-সংক্রান্ত তথ্য, অসামর্থ্য বা প্রতিবন্ধী হলে সেই তথ্যও উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এসব তথ্যই স্মার্টকার্ডে থাকবে।
প্রথম পর্যায়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ও কুড়িগ্রাম; দ্বিতীয় পর্যায়ে খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন; তৃতীয় পর্যায়ে ৬৪টি সদর উপজেলা এবং চতুর্থ পর্যায়ে বাকি সব উপজেলায় দেশজুড়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে।
প্রথমে ঢাকার উত্তরার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৩ হাজারেরও বেশি ভোটারের কাছে পরীক্ষামূলকভাবে স্মার্ড কার্ড বিতরণ শুরু হবে। ৩ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত উত্তরা হাই স্কুল ও কলেজে বিতরণকাজ চলবে। আর ঢাকা দক্ষিণে রমনা থানার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররা সিদ্ধেশ্বরী গার্লস হাই স্কুল ও কলেজ, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররা সেগুন বাগিচা হাই স্কুল এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটাররা উদয়ন স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে ৩ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড নিতে পারবেন।