খোলা বাজার২৪,সোমবার,০৩ অক্টোবর, ২০১৬ : দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্ককে অকার্যকর করার চিন্তাভাবনা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজ উদ্দীন আহমদ। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের আচার-আচরণ এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ভিআইপি লাউঞ্জে বীরউত্তম জিয়াউর রহামান শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ আয়োজিত বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আ স ম হান্নান শাহর মৃত্যু উপলক্ষে এক শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। : ড. এমাজউদ্দীন বলেন, ১৯তম সার্ক সম্মেলন স্থগিত করার মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। এতে করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি হবে, যা সুফল বয়ে আনবে না। সার্ক মানে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা। আটটি রাষ্ট্রের সমন্বয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সংগঠিত হয়েছিল। এটিকে যাতে অকার্যকর প্রমাণ করা যায়, অপ্রয়োজনীয় করা যায়, সে জন্য অনেকে বিদেশের এবং এ দেশের কিছু শক্তিশালী রাষ্ট্রের চিন্তাভাবনাকারী যারা থিঙ্কট্যাঙ্ক তাদের উদ্যোগে এটা সম্ভব হয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এতে ১৯ ভারতীয় সেনা নিহত হন। এরপর পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক অভিযান চালানোর কথা জানায় ভারত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সার্ক সম্মেলনে না যাওয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। এরপর বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভুটান, শ্রীলংকা সার্কের সভাপতি নেপালকে জানায়, তারাও সম্মেলনে যাচ্ছে না। বাংলাদেশ জানায়, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের হস্তক্ষেপের কারণে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, কাশ্মীরের মালিক কাশ্মীরের জনগণ। কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তান, কারোর নয়। আর কাশ্মীরের জনগণ অন্য কিছু চায় না শুধু বেঁচে থাকার জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার চায়। কাশ্মীরে আজ যে উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করছে বাংলাদেশেও ১৯৬৯ সালে এমন অবস্থা বিরাজ করেছে। আমি ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলার চিন্তা করি না। কিন্তু তাদের আধিক্যতা এমন পর্যায়ে চলে এসেছে তাদের সাথে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। : হান্নান শাহর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য হান্নান শাহ বাংলাদেশের কঠিন দুঃসময়ে বারবার জাতির সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন। তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অগ্র সৈনিক ছিলেন। তার আদর্শ না পালন করলে দেশ ও আমরা পিছিয়ে পড়ব। : আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, হান্নান শাহ’র ছোট ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমাতুল্লাহ, শাহবাগ থানা কৃষক দলের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।