Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

30kখোলা বাজার২৪, সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬ : মেহেরপুর গাংনীতে গোপনে বাল্য বিয়ে করে পালানোর চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি বর ও বরযাত্রীদের। টহল পুলিশের হাতে ধরা পড়ে অবশেষে ঠাঁ ইয়েছে শ্রিঘরে। রোববার রাত এগারটার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বর, বরের মামা ও চাচাতো ভাইকে এক মাস করে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন।

দণ্ডিতরা হচ্ছেন- এ উপজেলার কুলবাড়ীয়া গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে নব বিবাহিত হাসিবুল ইসলাম (২২), একই গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে ও বরের মামা তরিকুল ইসলাম (২৮) ও রবিউল ইসলামের ছেলে এবং বরের চাচাতো ভাই শাওন রেজা (২৫)।

জানা গেছে, সীমান্তবর্তী সহড়াতলা গ্রামের কৃষক নায়েব আলীর মেয়ে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী তানিয়া সুলতানার সঙ্গে কুলবাড়ীয়া গ্রামের হাসিবুলের বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু কনের বিয়ের উপযুক্ত বয়স না হওয়ায় উভয় পরিবার গোপনে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। সেমত রোববার সন্ধ্যায় হাসিবুল তার কয়েকজন ঘনিষ্ট আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে কনের বাড়িতে পৌঁছায়। খাওয়া-দাওয়া ও বিয়ে শেষে কনেকে নিয়ে তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথিমধ্যে তেঁতুলবাড়ীয়া মাঠের মধ্যে হিন্দা পুলিশ ক্যাম্পের একটি টহল দল তাদের বহনকৃত আলগামনটি থামার নির্দেশ দেয়। পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে তার সটকে পড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এসময় বর-কনেসহ অপর দুজনকে আটক করে পুলিশ। পালিয়ে যায় কয়েকজন বরযাত্রী। রাতেই হিন্দা ক্যাম্প থেকে তাদেরকে থানায় সোপর্দ করা হয়। রাত দশটার দিকে গাংনী থানার ওসি আটককৃতদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করেন।

গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম জামাল আহম্মেদ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনে বর হাসিবুলকে অপ্রাপ্ত বয়সী কনেকে বিয়ে করার অপরাধে এবং তরিকুল ও শাওনকে বিয়ের সহযোগিতা করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ-ের আদেশ দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে তাদেরকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলা কারাগারে প্রেরণের জন্য রাতে থানা হেফাজতে রাখে পুলিশ।

এদিকে বর ও কনের অভিভাবকরা অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে আত্মগোপন করে। রাতেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে কনে তানিয়া সুলতানাকে তার পিতার বাড়িতে পৌঁছে দেন।

এদিকে বর ও কনেসহ চারজনকে আটক করার পর তার গোপন রাখার চেষ্টা করেন হিন্দা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ। অদৃশ্য কারণে তিনি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি টের পেয়ে গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তাদেরকে থানায় প্রেরণের নির্দেশ দেন। তবে ধামাচাপা দেয়ার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে।