বৈঠকের মাধ্যমে পাকিস্তান ‘কাশ্মীরে ভারতীয় নৃশংসতার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ’ রয়েছে- মূলত এমন স্পষ্ট বার্তা বিশ্বের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে বলে খবর দিয়েছে ডন অনলাইন, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
বৈঠক শুরুর আগে সব দলের শীর্ষ নেতাদের স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। এ সময় তিনি আগতদের সঙ্গে হাত মেলান। পরে নওয়াজ শরীফ দেশটির সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন।
পররাষ্ট্র সচিব আইয়াজ আহমেদ চৌধুরী বৈঠকের শুরুতেই কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। বিশেষ করে সেখান নারী ও শিশুদের ওপর চালানো ভারতীয় নৃশংসতা তুলে ধরেন তিনি।
আইয়াজ আহমেদ বলেন, ‘কাশ্মীরই এখন আমাদের প্রধান ইস্যু। তবে আমরা কাশ্মীরসহ ভারতের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাসী। এ সময় তিনি ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দাবি নাকচ করে দেন। একইসঙ্গে উরিতে হামলার ঘটনায় নিজেদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা আবারও অস্বীকার করেন।
এরপর বিভিন্ন দলের নেতারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। বৈঠকে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো বলেন, ‘অনেক ইস্যুতে আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নই। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা কাশ্মীর ইস্যু এবং ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আপনার সঙ্গে রয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাকে সব ধরনের সমর্থন দেব। পিপিপি কাশ্মীর ইস্যুতে স্পষ্ট অবস্থান নিবে। পাক-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি টার্নিং পয়েন্ট।তিনি আরও বলেন, ‘একমাত্র ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানই ভারতের আগ্রাসনের জবাব দিতে পারবে। আমরা একসঙ্গে কাজ করলে জাতীয় নিরাপত্তার লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হব। সৈন্য দিয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে না।’
বৈঠকে বিভিন্ন দলের শীর্ষ রাজনীতিকরা কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে তারা সব দলের সমন্বয়ে ‘নিরাপত্তা কমিটি’ গঠনের কথা বলেন।
নেতারা কাশ্মীরের ঘটনা তদন্ত করে ভারতের নৃশংসতার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে বিষয়টি তুলে ধরার পরামর্শ দেন। উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকে এএমএল এবং এপিএমএল ছাড়া প্রায় সব দলের শীর্ষ নেতা এবং সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্বকারীকে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। তাদেরও প্রায় সবাই উপস্থিত হয়ে সাড়া দেন।
বৈঠকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, অর্থমন্ত্রী ইশাক দার, পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো, জেইউআই-এফ প্রধান মাওলানা ফজলুর রেহমান, সিনেটর শেরি রেহমান, ফারুক সাত্তার এবং পিটিআই নেতা শারিন মাজারি উপস্থিত ছিলেন।
তবে আওয়ামী মুসলিম লীগের (এএমএল) নেতা শেখ রশিদ আহমেদকে দাওয়াত না দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের কড়া সমালোচনা করেছেন পিটিআই চেয়ারম্যান ও কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইমরান খান। এক টুইটবার্তায় তিনি নওয়াজ শরীফকে ‘নোংরা’ এবং ‘অসহিষ্ণু’ মনের অধিকারী বলে মন্তব্য করেছেন।