Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৬ : গতকাল রবিবার বিকেলে মতিঝিল অফিস থেকে বের হয়ে কার্জন হল থেকে এক বন্ধুকে নিয়ে নিলক্ষেত বলাকা সিনে ওয়ার্ল্ডে । উদ্দেশ্য সাড়ে ছয়টা’র শোতে “আয়নাবাজি” দেখা। টিনএজে সিনেমার বেশীর ভাগই দেখা হতো হলে গিয়ে, তবে এখন ভালো কোন সিনেমো হলে মাঝে মধ্যেই সিনে পর্দায় উকি ঝুঁকি দেয়া।

আধুনিক সিনেমা জগতে মুভি প্রমোশনে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে, কিন্তু আয়নাবাজির প্রমোশন চঞ্চলের জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনল বাংলাদেশের ক্রিকেটের কল্যানে। এখন আয়না চরিত্র ছবির প্রমোশনতো সামাজিক যোগাযোগ মাধমে ছড়িয়ে গোটা বিশ্বে। কয়েকদিন ধরে দেখছি জাতীয়দলের ক্রিকেটারদের ব্যাক্তিগত আইডি ফেসবুক টুইটারের কল্যানে হল গুলোতেও সিনেমা প্রেমীদের মধ্যে বেশ ভালো সাড়া ফেলেছে।

বলাকার সামনে যেতেই প্রচন্ড ভিড়ে হোঁচট খেলাম। পৌঁনে ছয়টার মধ্যে গিয়ে দেখি দুটো টিকেট কাউন্টারই বন্ধ। ভাবছি আজ আর “আয়নাবাজি” দেখা হবে না। কিছু টিকেট আছে ব্লাকে পাওয়া যায় তবে তাও ১১৫ টাকার টিকেট ১৪৫ টাকার সীল মেরে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। বাধ্য হয়ে হল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ১ম শ্রেনীতে বসে “আয়নাবাজি” দেখার সুযোগ হলো। তবে যে উদ্দেশ্যে হলে যাওয়া তা পরিপূর্ন স্বার্থক কি বলা যায়…?aynabazi-film

অমিতাভ রেজা চৌধুরীর সিনেমা আয়নাবাজি’র -“আয়নাবাজি” রাজনৈতিক শিকার জজ মিয়া টাইপের কনসেপ্ট ভালো ছিল। সৈয়দ গাউছুল আজমের গল্প অবলম্বনে রাজনৈতিক থ্রিলার ধর্মী এ মুভিতে চঞ্চল চৌধুরীর ৬টি চরিত্রের ডাক পিয়নের চরিত্রটি বাদে সব গুলির প্রশংসা করতেই হবে। অভিনয় দক্ষতাই প্রমান করে এ ছবির জন্য চঞ্চলই সেরা। চঞ্চলের বিভিন্ন চরিত্রের জেলে থাকা অতঃপর কিছু দিন জেল খেটে বের হয়ে আসা বাস্তব চরিত্রের সংযোজন। তবে মাসুমা রহমান নাবিলার চরিত্রটি নায়িকার সাথে মননশীল ছিলোনা। পার্থ বড়ূয়ার বাস্তব সাংবাদিকার চরিত্রটিও প্রশংসার দাবী রাখে, সাথে হাসির খোরাক জোগাতে ছিলেন মীরাক্কেল খ্যাত জামিল। ছবির অন্য চরিত্রগুলোও প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। সিনেমার সংলাপও ভালো ছিল। ডিজিটালাইজড সময়ের হিসেবে সিনেমার সাউন্ড সিস্টেম ছিল যথেষ্ট অগোছালো। অনেক সংলাপই বোঝা যায়নি। ব্যাকগ্রউন্ড মিউজিক ছিল ভালোই, এখানে চিরকুটের গানের প্রশংসা করতেই হয়। ফুয়াদ আল মুক্তাদিরের আয়নাবাজি’র টাইটেল গানটা দর্শকের মনে টান ধরেছে। অনেকের মুখেও এখন লাক ভেলকি লাক ভেলকি গানটা শোনা যায়। কোরিওগ্রাফার অতটা হাত পাকা নয় বোঝাই যায়। গ্রাফিক্স ছিল চরম বাজে। সিনেমার এডিটরকে খুব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মনে হলো না। অন্ধকারময় ছিল সিনেমার পর্দা। তাই বলতেই হয়, এতো জনৎসবের মধ্যে দেখলাম এ কেমন আয়নাবাজি!

অমিতাভ রেজা চৌধুরীর পরিচালনায় আয়নাবাজিতে অভিনয়ে ছিলেন চঞ্চল চৌধুরী, মাসুমা রহমান নাবিলা, পার্থ বড়ূয়া, হিরা চৌধুরী, বৃন্দবন দাস, লুৎফর রহমান জর্জ, শওকত ওসমান, সোহেল রানা প্রমুখ। গানের কথা লিখেছেন পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী, অর্নব, রাজিব অশরাফ, শান, শারমিন সুলতানা সুমি। সংগীতে ছিলেন অর্নব, চিরকুট ব্যান্ড, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, ফুয়াদ আল মুক্তাদির এবং হাবিব ওয়াহিদ।

পরিশেষে বলব, অনেকদিন পর সিনেমা হলে দেশের চলচিত্রের বাস্তব অবস্থান প্রেক্ষাপটে পরিবার নিয়ে হলে গিয়ে দেখার মত ছবি “আয়নাবাজি”।