খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৬: বিপিসি’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান এলপি গ্যাস লিমিটেডের সিলেটের কৈলাশটিলা প্লান্টে এক বছরে ২৩৫ মেট্রিক টন লিকুইফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ‘অপারেশন লস’ হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে লস হওয়া এই গ্যাসের আনুমানিক মূল্য এক কোটি ১৯ লাখ টাকা। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক হিসাব নিরীক্ষণকালে এই লসের বিষয়টি উঠে আসে। লসের কারণ সম্পর্কে এলপি গ্যাস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এলপি গ্যাস লিমিটেডের মহা-ব্যবস্থাপক এবং চট্টগ্রাম ও কৈলাশটিলা প্লান্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুর রহমান খান গ্যাসের ঘনত্বের (ডেনসিটি) তারতম্যের কারণে অপারেশন লস হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
তবে তার এই ব্যাখ্যা সঠিক নয় উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র বলছে, ঘনত্বের তারতম্য বড় কোনো ব্যবধান হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ গ্যাস গ্রহণের সময় ঘনত্ব যা থাকে বিক্রির সময়ও একই থাকবে। তাই লস হতে পারে না। তারা বলেন, আসলে এলপি গ্যাস ও আরপিজিসিএলের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার পারস্পরিক যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ গ্যাস চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এখন গ্যাসের ‘ঘনত্বকে’ চিহ্নিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে এলপি গ্যাস কর্তৃপক্ষের ভূমিকা রহস্যজনক উল্লেখ করে তারা বলেন, সারা বছর ধরে গ্যাস চুরি হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি মন্ত্রণালয়কেও সমস্যাটি জানানো হয়নি।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সিলেটের রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) নিকট থেকে সর্বমোট ৬ হাজার ১১১ দশমিক ৩৬ মেট্রিক টন এলপিজি সংগ্রহ করে এলপি গ্যাস লিমিটেডের কৈলাশটিলা প্লান্ট। একই অর্থবছরে গ্যাস বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৯২৯ মেট্রিক টন গ্যাস। এর সাথে গত অর্থবছরের প্রারম্ভিক মজুদ ও সমাপনী মজুদ মিলিয়ে সর্বমোট ২৩৫ মেট্রিক টন গ্যাস অপারেশন লস হয়েছে বলে জানা যায়। এলপি গ্যাস বিপণন করে বেসরকারি কোম্পানিগুলো যেখানে লাভবান হচ্ছে সেখানে অপারেশন লসের নামে সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ গ্যাস ‘হাওয়া’ হয়ে যাওয়া বিস্ময়কর ব্যাপার। ইত্তেফাক