এই রে (হাসি)। কারও ওপর অভিমান নেই। কিন্তু জীবনে অভিমান ডেফিনিটলি হয়। যাদের সঙ্গে ভালোবাসা আছে, যাদের থেকে কিছু প্রত্যাশা থাকে, তাদের ওপর অভিমান হয়। এই মুহূর্তে কারও ওপরে কোনওরকম অভিমান নেই। অনেকের হয়তো থাকতেও পারে। যদি কারও থাকে তাহলে সেটা ভাঙাতেও রাজি আছি।
আমার চরিত্রটাও সিনেমায় এরকম। আমার অভিমান নেই। অভিমান আমার পিসির। অঞ্জনা বসুর। তার অভিমান আমি ভাঙানোর চেষ্টা করছি। আমার দাদুর ইচ্ছে যে তাঁর মেয়ের সঙ্গে তাঁর যে মান অভিমান চলছে তা আমাকে ভাঙাতে হবে। সেই চেষ্টাই একটা জার্নি। এটাই ছবির গল্প। বিগত কয়েকবছরে আমি যে ধরনের ছবি করেছি তার থেকে একটু বেশি হৃদয়ের গল্প বলবে অভিমান।
এত হৃদয় হৃদয় করছেন। দুই নায়িকার সঙ্গে ছবিতে কতটা প্রেম হল?
নায়িকাদের সঙ্গে বলতে এখানে প্রেমটা শুভশ্রীর সঙ্গে।
সায়ন্তিকার সঙ্গে তাহলে প্রেম হয়নি?
সায়ন্তিকার সঙ্গে কী করেছি জানতে হলে ছবিটি দেখতে হবে। ছবিতে ওর জীবন সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার নয়। সবসময় দোটানায় থাকে।
এই ছবিতে জিৎ অ্যাকশন না প্রেম কোনটা বেশি করেছে?
অভিমানে জিৎ মারপিট করেছে কম, প্রেম করেছে বেশি। অ্যাকশন, রোমান্স, কমেডি, ভালো গান সবকিছু আছে। এই ছবিতে ফ্যামিলি বন্ডিংয়ের ওপরই জোর দিয়েছি আমরা। তিন বছর আগে থেকেই আইডিয়াটা ছিল। রাজের সঙ্গেও কথা হচ্ছে এক-দেড় বছর ধরে। আমার এক ছোটবেলার বন্ধু জয়দীপ। অনেকদিন ধরেই ওর ছবি করার ইচ্ছে ছিল। যখন আমি অভিনয়ে আসিনি তখনই জয়দীপ বলেছিল তুই নায়ক হলে আমি একটা ছবি বানাব। জয়দীপ এই ছবি দিয়ে প্রযোজনায় এল। WMW প্রোডাকশন। আমাদের অনেকদিনের একটা ইচ্ছে ‘অভিমান’ পূরণ করল।
অভিমান-এর শ্যুটিং ফ্লোরে জিৎ আর রাজ চক্রবর্তী। দুই ‘লেডি কিলার’। এখানে কে চালিয়ে খেলল? স্কোর কার বেশি?
জিৎ বা অন্য কেউ কে থাকল সেটা কোনও ফ্যাক্টর নয়। রাজ থাকলে নায়িকারা সবসময় রাজের সঙ্গেই থাকে (দুষ্টুমি ভরা হাসি)। তবে এই প্রশ্নের উত্তর সব থেকে ভালো নায়িকারাই দিতে পারবে। নিজেকে নিজে নম্বর দিতে চাই না। তবে পিছিয়ে নেই এটুকু বলতেই পারি।
একসঙ্গে ছ’টি ছবির মুক্তি কী বাড়াবাড়ি হল?
উৎসবের সময় দর্শক টিকিট কেটে ছবি দেখেনই। ফেস্টিভ মুড। তাই সকলেই হইহই করে কাটাতে চান। প্লাসও আছে, মাইনাসও আছে। তবুও আমার মনে হয় উৎসবের সময় তিনটে ছবি ঠিক আছে। ছ’টা হয়তো একটু বেশি হল। কিন্তু চূড়ান্ত কথা বলার সময় এখনও আসেনি। দুর্গাপুজোর পরে সবাই যদি চান তাহলে ইন্ডাস্ট্রির সকলে একসঙ্গে বসে রুটম্যাপ ঠিক করতে হবে।
আপনার তো হ্যাটট্রিক ফেজ চলছে?
হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন। শুভর সঙ্গেও তিনটে ছবি, রাজ আর সায়ন্তিকার সঙ্গেও তিনটি ছবি। শুভ কাজের ব্যাপারে ভীষণ সিরিয়াস। ভীষণ প্রফেশনালি কাজ করে। ওকে যেদিন থেকে দেখছি শি ইজ গ্রোইং অ্যাজ অ্যান অ্যাক্টর। সায়ন্তিকার মধ্যেও ভালো কাজ করার ইচ্ছে আছে। নানা ধরনের কাজ করতে চায়। তবে শুভশ্রী প্র্যাকটিকাল। সায়ন্তিকা সেখানে আবেগে চলে। একটু ইমোশন বেশি।
ছবির সংগীত পরিচালক শুদ্ধও তো আপনার আবিষ্কার?
শুদ্ধ নতুন ছেলে। অবসর পেলেই ট্যুইটারে মাঝে মাঝে আমি সময় কাটাই। দেখি কারা কারা কী ট্যাগ করেছে। শুদ্ধ এরকমই একটা লিংক আমাকে পাঠিয়েছিল। শুনে আমার ভালো লাগে। ওকে প্যাশনেট মনে হয়েছিল। আমি অফিসে বললাম যোগাযোগ করতে। তারপর ও ফার্স্ট কাজ করল বাদশায়। দুটো গান করল, দুটোই হিট। ‘ধ্যাত তেরি কি’ আর রোমান্টিক ট্র্যাকটা। এবার পুরো অ্যালবামটা করেছে। এই ইন্টারভিউ দেওয়া পর্যন্ত তিনটে গানই ইউ টিউবে ১ মিলিয়ন ক্রস করেছে। আমি খুশি যে ওর কাজ সকলের পছন্দ হচ্ছে।
বাংলা ছবির প্রায় সব নায়ক-নায়িকাই এবার পুজোয় হাজির। আপনি কী ভাবছেন যে এবার ওদের দেখিয়ে দেব?
না না একেবারেই নয়। আমি গত চোদ্দো- পনেরো বছর ধরে কাজ করছি। কাউকে নতুন করে দেখানোর কিছু নেই।
এ তো নিরামিষ উত্তর। একটু অ্যাগ্রেসিভ কিছু চাই…
অ্যাগ্রেসিভ উত্তর কেন দেব। আমার ইন্টারভিউ বোরিংই হয়। (হাসি) যেটা আমি মনে করি সেটাই তো বলব। এত আইডিয়া, এত মানুষ, এত স্বপ্ন। সেলিব্রেশনের সময় সবাই নিজের নিজের কাজ নিয়ে আসছে। সবাইকে শুভেচ্ছা। এখন দেখার কোন ছবির ভাগ্যে কী আছে।
মাল্টিস্টারার ছবিতে কাজ করতে চান না?
কেন? (একটু থেমে)আগেও করেছি। ভবিষ্যতেও ইন্টারেস্টিং কিছু পেলে নিশ্চয়ই করব।
জুলফিকরের জন্য সৃজিত কথা বলেনি?
হ্যাঁ কথা হয়েছিল। কিন্তু এখন আমরা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। রিলিজের মুখে। এই নিয়ে আর কথা বলতে চাই না।
পুজোয় কী প্ল্যান?
পুজোয় অভিমান নিয়ে অনেকটা সময় যাচ্ছে। আমি যেখানে থাকি এবছর সেখানে প্রথম পুজো। অনেকদিন ধরে ছুটি দরকার ছিল। পুজোর মাঝামাঝি সময় একটু ছুটি কাটাতে গ্রিস যাচ্ছি।
আপনার স্ত্রী মোহনার কি অভিমান হচ্ছে?
মোহনার কোনও অভিমান নেই। মোনা এই ছবিটা নিয়ে খুব আশাবাদী। আমার মেয়েরও চার বছর হল। ও গানগুলো শুনে বেশ মজা পাচ্ছে। সেলফিটা ভালো লেগেছে। সাইয়াটাও। ও গুনগুন করছে গানগুলো।
জিৎ সকলের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সেভাবে পাওয়া যায় না। পাবলিক ফাংশনে কম যান। রাজনৈতিক মঞ্চেও অনুপস্থিত…
কারণ খুঁজে পেলে নিশ্চয়ই যাই। আমি ভালো সিনেমা দেওয়ার চেষ্টা করছি মানুষকে। যাই তবে খুব ঘন ঘন যাই না হয়ত।
সরকারের কাছে ঘেঁষেন না বলে কাজের ক্ষেত্রে অসুবিধা হয় না?
একেবারেই না। আই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড পলিটিক্স। গভর্নমেন্ট ইজ কাইন্ড এনাফ টু টেক কেয়ার ফর এভরিওয়ান।
স্পেশাল কাউকে ‘অভিমান’ দেখাতে চান?
যত বেশি দর্শক দেখবেন সেটাই আমার কাছে স্পেশাল। এছাড়া সেইরকম কেউ স্পেশাল নেই।
আর আপনার বিশেষ বন্ধু কোয়েল?
কোয়েলের কথা আমার মাথায় আছে। আমি ওর সঙ্গেও ছবি করব। অনেকদিন কথা হয়নি। তবে আমি শিওর ও অভিমানের ট্রেলার দেখেছে। কোয়েল, শ্রাবন্তী, নুসরত, শুভশ্রী, সায়ন্তিকা সকলের সঙ্গেই আমার দারুণ সম্পর্ক। আই ফিল ব্লেসড টু ওয়ার্ক উইথ অল অব দেম।
এতজন নায়িকার নাম নিলেন। কার সঙ্গে জিতের প্রেমটা বেশি?
এটা কী করে বলব। একজনের নাম নিলে অন্যজন রেগে যাবে তো। আমার মনে হয় প্রেম বস্তুটাই ভীষণ সুন্দর। যত বেশি উজাড় করা যায় তত বাড়তে থাকে। সবার সঙ্গে প্রেম করতেই ভালো লাগে।
তাহলে জিৎ নতুন নতুন প্রেমে পড়ে সেটা মোহনা জানে?
ইয়েস অফকোর্স। মোহনা জানে। অনস্ক্রিন তো। তাই কোনও চাপ নেই।
