আজ বিশ্বব্যাংক এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের যৌথ উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ সম্মেলন কক্ষে ঢাবিতে স্থাপিত “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রযুক্তি হন্তান্তর অফিসের (ডিইউটিটিও)” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। তারা বলেন,দেশের ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষের বয়স ৩৫ বছরের নীচে হলেও, দক্ষতা ও কারিগরি জ্ঞানের অভাবে শিল্পায়নে এর সুফল কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না।
এ অবস্থার পরিবর্তনে তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি ও সৃজনশীল উদ্ভাবনের প্রয়াস জোরদার করতে হবে। এ লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্প কারখানার মধ্যে কার্যকর সংযোগ গড়ে তোলা জরুরি।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআইর সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রযুক্তি হস্তান্তর অফিস প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকায় আমেরিকান সেন্টারের সংস্কৃতি বিষয়ক কর্মকর্তা জর্জ মেসথোজ, বিশ্ব ব্যাংকের উর্ধ্বতন গবেষক মো: মোখলেসুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্স বিভাগের উধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
প্রতিবছর ২০ লাখ তরুণ-তরুণী চাকরির বাজারে আসলেও মাত্র ২ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে এ কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, কারিগরি জ্ঞানে দক্ষ জনবলের চাহিদা থাকলেও সাধারণ শিক্ষায় ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা তা পূরণ করতে পারছে না। ফলে বিদেশি দক্ষকর্মীরা বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিয়ে যাচ্ছে। তারা এখাতে বিরাট অংকের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য তারা দেশেই সৃজনশীল উদ্ভাবন, গবেষণা ও উন্নয়নখাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেন।পাশাপাশি তারা তরুণ উদ্ভাবকদের মেধাস্বত্ত্ব সুরক্ষায় মেধাসম্পদ আইনের আধুনিকায়নের পরামর্শ দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন,প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতি ও কাঠামোর দুর্বলতার কারণে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের অনেকেই কর্ম জীবনে সাফল্য পাচ্ছেন না। এ অবস্থার পরিবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়-শিল্প কারখানা-সরকার ত্রিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন,পাশাপাশি শিল্প কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম ঢেলে সাজাতে হবে। পাঠক্রমে সৃজনশীলতা,কর্মমুখী ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার বিষয়টি অর্ন্তভূক্ত করতে হবে।
আমির হোসেন আমু বলেন,বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ অর্জন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। গত আট বছর ধরে অর্জিত ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রেখে ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।