খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর, ২০১৬: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কেটগাঁও গ্রামের হাতে-পায়ে গাছের শিকড়ের মতো রোগে ভোগা বৃক্ষশিশু’ রিপন রায়কে এবার দূর্গাপূজার উৎসব কাটাতে হবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের শিশু ওয়ার্ডে। বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে বৃক্ষশিশু রিপন ও তার বাবা-মায়ের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। ‘বাবার সাথে প্রতিবছর দুর্গোপূজোর সময়ে মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে প্রতিমা দেখতাম।মিস্টি খেতাম।খুব মজা করে সময় কাটাতো।কিন্তু এবছর আর মনে হয় ঘুরতে পারবো না।পূজোর সময় এবার হাসপাতালেই থাকতে হবে।’এভাবেই কথাগুলো বলছিল ৮বছর বয়সী শিশু রিপন রায়। সে আরও বলে, এবার আর নতুন জামা-প্যান্টের জন্য বাবার কাছে বায়নাও ধরতে পারলাম না। ও বলে,‘হাসপাতালে থাকতে আর ভালো লাগে না। কবে যে বাড়ি যেতে পারবো।’ রিপনের বাবা মহেন্দ্র রাম বলেন,‘ছেলেকে নিয়ে এবার পূজো হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে। বাড়িও যেতে পারছি না ছেলেকে রেখে। বাড়িতে দুই মেয়েকে রেখে কয়েক মাস ধরে হাসপাতালেই আছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় থাকার কারণে আমার আয় রোজগার বন্ধ আছে।ছেলের চিকিৎসা তো সরকারি খরচেই চলছে।হাসপাতালে রাতে শুধু আমার ছেলে ও স্ত্রীকে থাকতে দেওয়া হয়।আমার থাকার খুব কষ্ট হচ্ছে।মাঝে মাঝে রাস্তাতেও ঘুমাতে হয়।আর বাড়িতে আমার মেয়ে দুইটা আছে তাদের খরচও দিতে পারছি না। কি যে করবো বুঝছি না।’ রিপনের মা গোলাপী রাণী বলেন,‘প্রশাসনের মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি হইছি। এর মধ্যে ছেলের দুই হাতে একবার অপারেশন করা হইছে। আর আমার স্বামীর রোজগারও বন্ধ। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন আগে খোঁজখবর নিচ্ছিল এখন তো আর খবর নেয় না।ডাক্তার বলেছে ছেলের সুস্থ হইতে নির্দিষ্ট কোন সময় এখনও বলা যাচ্ছে না।’ রিপনের বিষয়ে চিকিৎসার বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁকে পাওয়া যায় নি। উল্লেখ্য,২১ অগাস্ট রিপনকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শিশু রিপনের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন তার চিকিৎসায় এগিয়ে আসে। শিশু রিপনের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কেটগাঁও গ্রামে।