খোলা বাজার২৪, শনিবার, ০৮ অক্টোবর, ২০১৬: দীর্ঘ ৬ মাসাধিককাল পর নরসিংদীর ঘোড়াশাল ও পলাশ ইউরিয়া সারখারখানা দুটি চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত বৃস্পতিবার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ কারখানা দুটিতে গ্যাস সংযোগ পূন:স্থাপন করেছে। গ্যাস সংযোগ পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ কারখানা দুটি বিভিন্ন যান্ত্রিক বিভাগগুলো চালু করতে শুরু করেছে। কোন প্রকার যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা না গেলে চলতি সপ্তাহে ইউরিয়া উৎপাদন শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে কথা হয় কারখানা দুটি কর্তৃপক্ষের সাথে। এবিষয়ে ঘোড়াশাল ইউরিয়া সরকারখানার মহা ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মতিউর রহমান জানান, দেশের সেচ ব্যবস্থার স্বার্থে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘোড়াশাল সারকারখানা ও পলাশ সারকারখানাসহ কয়েকটি কারখানার গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয় পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ। তিনি আরো জানান, পেট্রো বাংলা কর্তৃপক্ষের মৌকিক নির্দেশে বৃহস্পতিবার সকালে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়। আর এরপর থেকেই কারখানার বিভিন্ন অংশ এক এক করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে শুক্র/শনিবারের মধ্যে বয়লার চালু করা হবে। বয়লার চালু হলেই কারখানার উৎপাদনের মূল প্রকৃয়া শুরু হবে। আর ইউরিয়া উৎপাদন আসতে ৫/৭দিন সময় লাগতে পারে। যা গত বছর কারখানার চালু হওয়ার পর উৎপাদনে আসতে সময় লেগেছিল ৭ দিন।
বিসিআইসি নিয়ন্ত্রনাধীন ১৪২২ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন দেশের বৃহত্তম সার উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ঘোড়াশাল ইউরিয়া সারকারখানা এবং ৩০০ মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন পলাশ ইউরিয়া সারকারখানা সরকারী নির্দেশে গ্যাস সংযোগ ৬ মাস পূর্বে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। ফলে গত ৩১ মার্চ থেকে কারখানা দুটি বন্ধ হয়ে যায়। গত ২২ সেপ্টেম্বর বিসিআইস কর্তৃপক্ষ কারখানা দুটি চালু করার তারিখ নির্ধারন করে। কিন্তু পরে আবার আগের চিঠির কার্যকারীতা স্থগিত করার জন্য আরেকটি চিঠি প্রেরণ করে। যার ফলে গত ২২ সেপ্টেম্বর কারখানা দুটি আর চালু করা সম্বভ হয়নি। এদিকে বিগত ৬ মাস যাবত কারখানা দুটি বন্ধ থাকার ফলে বেসরকারী হিসেব মতে ৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৬০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই ঘাটতি পূরন করার জন্য সরকারকে বিদেশ থেকে সম পরিমান সার বাড়তি মূল্যে আমদানী করতে হয়েছে। এতে সরকারের ব্যায় হয়েছে ১ হাজার ৮শত ১৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। এতে সরকারের রাজকোষ থেকে অতিরিক্ত ১ হাজার ২৮৮ কোটি ৪২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যায় করতে হয়েছে। এরপরেও উৎপাদন শতভাগ অর্জিত না হলে এ ঘাটতির পরিমাণ আরো বেড়ে যাবার আশংকা রয়েছে বলে জানা গেছে। যার প্রভাব পড়তে পারে দেশের সামগ্রিক কৃষি উৎপাদনের উপর।