খোলা বাজার২৪, শনিবার, ০৮ অক্টোবর, ২০১৬: মুন্সিগঞ্জে প্রকাশ্যে তৈরী হচ্ছে মনোফিলামিন কারেন্ট জাল। এ সকল কারেন্ট জাল কারখানার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের নামে চলছে নাটক। ২০০৫ সালে মৎস্য সংরক্ষন আইনে আদালত কারেন্ট জ্বাল অবৈধ ঘোষনা করার পরও, মুন্সিগঞ্জে প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় দিনে রাতে তৈরি করা হচ্ছে ছোট বড় সবধরনে মাছ নিধনের মনোফিলামিন (কারেন্ট জাল)। ইলিশের পোনা জাটকা ও সকল ধরনের ছোট মাছের জন্য যেন এক মরন ফাঁদ। সরকারী কাগজপত্র, লাইসেন্স ছাড়া জেলায় অবৈধ কারেন্ট জালের ফ্যাক্টরি রয়েছে প্রায় ২ শতাধিক। মোবাইল কোর্টের নাটকের মাধ্যমে জাল উৎপাদনে আরো উৎসাহ যোগাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতারাও এই জাল কারখানা থেকে মাসিক চাঁদা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনেকে কারখানা বন্ধ রাখলে, ও প্রশাসনের লোকজনকে হাত করে প্রভাবশালিরা চালিয়ে যাচ্ছে মাছের এই মরন ফাঁদের অবৈধ ব্যবসা। মাঝে মাঝে র্যাবের অভিযানে কিছু কারখানায় জরিমানা আদায় করলেও বন্ধ করা হচ্ছে না এসব কারখানা। অভিযানে ধারাবাহিকতা বজায় না থাকায় দিনে দিনে কারখানার মালিকরা অনেকটা প্রকাশ্যে উৎপাদনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে অভিযানে র্যাবের ভূমিকা থাকলেও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা একে বারেই নেই বল্লেই চলে।
নিষিদ্ধ এসব করখানায় অভিযান পরিচালনার আগে কারেন্টজাল উৎপাদ মালিককে জানিয়ে দেয়া হয় অভিযানের তথ্য এমন অভিযোগও রয়েছে মৎস্য কর্মকতা ও প্রশাসনের একাধিক অফিসারের বিরুদ্ধে। যার ফলে অভিযান পরিচালনার আগে বন্ধ হয়েছে প্রভাবশালীদের শত শত কারেন্ট জাল উৎপাদন কারখানা । ফলে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান ফ্লপ হয়ে যায়। তবে মাঝে মধ্যে দু’একটি করখানায় লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে থেমে যায় প্রশাসনের কার্যক্রম এমনটা মনে করেন কারখানা এলাকার সাধারণ মানুষ।
জেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায় পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর, রামগোপাল পুর, মুক্তারপুর, মালির পাথর, দয়ালবাজার, বিসিক, মাদবরবাড়ী সহ বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়া মহল্লায় এখনো প্রকাশ্যে তৈরি হচ্ছে মনোফিলামিন (কারেন্ট জ্বাল)। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কারখানা বন্ধ রাখলেও বড় বড় ব্যবসায়ীরা চালিয়ে যাচ্ছে নিষিদ্ধ এ ব্যবসা।
নিষিদ্ধ কারেন্ট জ্বাল কারখানা বন্ধের জোরদাবী জানিয়ে সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, মাছধরা জেলেদের কাছ থেকে জ্বাল জব্দ করে অবৈধ কারেন্ট জ্বাল উৎপাদন বন্ধ করা যাবেনা । প্রায় সময় দেখা যায় কারেন্ট জ্বাল ব্যবহারের কারনে অসহায় জেলেদের কাছ থেকে জ্বাল নিয়ে আসে এবং জেলেদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয় এটা খুব দুঃখ জনক । তাই অতিদ্রুত মাছের জন্য মরন ফাঁদ কারেন্ট জ্বাল কারখানা বন্ধ করে দেশের অন্যতম প্রদান সম্পদ মাছ রক্ষা করতে হবে।
বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে তৈরি হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল এমন দাবী করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পঞ্চসারে একাধিক ব্যক্তি জানান, যেভাবে আবার কারেন্ট জাল উৎপাদন হচ্ছে আমরা তা দেখে রিতিমোত অবাক হয়ে যাচ্ছি। দেশে কি আইন কানুন নেই। সরকার দেশের মৎস্য সম্পদ বাঁচাতে এলাকার সব অবৈধ কারখানায় অভিযানের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নিলে কারেন্ট জ্বালের মরন ফাঁদ থেকে বেঁেচ যাবে জাটকা সহ সব ধরনের ছোট ও বড় মাছ এমনটা মনে করেন তারা।
প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চালানো হচ্ছে কারখানা এমন দাবী করে মোহনা ফিসিং নেটের বোরজাহান, নিউ সোনালীর ফরুক ও অপর কারখানার নাম না জানা ইসমাইল, আনিস, মন্ডল, মোশারফ, রিপন ও মিতু বেগম নামের একাধিক মালিক জানান, যেখানে প্রশাসনের মাথা ব্যথা নেই সেখানে আপনার মতো সাংবাদিকরা নিউজ করে কি করবেন। যেহুতো কারেন্ট জাল কারখানা দিযেছি সেখানে তো রুটি বানাতে পারিনা । কারেন্ট জালই বানাই।
নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল কারখানায় অভিযান পরিচালনার আগে অভিযানের তথ্য মালিক পক্ষকে জানিয়ে দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শাহাজাদা খসরু বলেন, এটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে এবং থাকবে।
তবে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট একে এম শওকত আলম মজুমদার বলেন, অবৈধ কারেন্ট জাল কারখানার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। যে সব স্থানে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল কারখানা রয়েছে সে সব স্থান চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি সংবাদ কর্মীদের কাছে জাল তৈরি কারী কারখানার লিস্ট থাকলে লিস্ট অনুযায়ি অভিযান করা হবে বলেও জানান তিনি।
তবে কথায় নয় দেশের মৎস্য সম্পদ বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন সরকার এমনটাই আশা করছে সাধারণ মানুষ।