খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৬: হাতে টিকিট নেই। তাতে কী? তারা যে পুলিশ ও বিসিবির মৌসুমি নিরাপত্তাকর্মীর পরিচিত! বাধা কে দেবে? ইশারা পেয়েই পাঁচ-ছয়জনের দলটা বিনা বাধায় ঢুকে পড়ল। বিষয়টি দেখে পিছু নেয় স্টেডিয়ামের এক নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী। তাকে উদ্দেশ করে পুলিশের ওই এসআই জোর গলায় বলে ওঠেন, গেট ছেড়ে যান কোথায়? আমি দেখছি! এরপর ওই এসআই আর নিরাপত্তাকর্মী ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে তাদের স্টেডিয়ামে প্রবেশ করিয়েই ‘দায়িত্ব’ শেষ করলেন!
ঘটনাটা চট্টগ্রামের সম্পন্ন হওয়া গতবারের বিপিএলের সময়। এ রকম দৃশ্য জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নিয়মিত। খেলার নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের স্বজন-পরিচিতরা প্রতি ম্যাচে এভাবে ঢুকে পড়ছেন। টিকিট না থাকায় গ্যালারিতে গিয়ে বসেন অন্যের চেয়ারে। চেয়ারের আসল মালিককে বাধ্য হয়েই খেলা দেখতে হয় দাঁড়িয়ে।
দেশের মাটিতে টানা ছয়টি ওয়ানডে সিরিজ জিতে উড়ছেন মাশরাফিরা। পথচলায় এবার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইংল্যান্ড। যাদের সঙ্গে শেষ পাঁচটি সাক্ষাতের তিনটিতেই হেসেছে টাইগাররা। সর্বশেষটা রোববার, মিরপুরে। সমতায় ফেরার পর মাশরাফিদের সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস এখন বৃহস্পতির তুঙ্গে! কারণ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটা যে লাকি গ্রাউন্ডে! এরই অনুষঙ্গ- টিকিটের জন্য হাহাকার।
চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ২০ হাজারের কিছু বেশি। এই টিকিটের প্রায় ৩০ শতাংশ সৌজন্য টিকিট হিসেবে বিলি করতে হয় বিসিবিকে। মন্ত্রী, এমপি, নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, খেলোয়াড়, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের এসব সৌজন্য টিকিট দেওয়া হয়। বাকি টিকিট যা আছে তারমধ্য থেকেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কিনে নেন বিসিবির কর্মকর্তা, খেলোয়াড়রাসহ প্রভাবশালীরা।
বাকি টিকিট সাধারণ দর্শকদের জন্য বিক্রি করা হয়। টিকিটের এ অংশেও আছে দুটি ভাগ। কিছু টিকিট খেলার দিন সকাল ৮টা থেকে জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের বাইরের বুথে বিক্রি হবে। আর কিছু অনলাইনে ‘সহজ’ ডটকমের মাধ্যমে ছাড়া হয়েছে। অনলাইনে ৩০-৩৫ শতাংশ টিকিট বিক্রির কথা রয়েছে। কিন্তু বিক্রির এই প্রক্রিয়াটা ‘সহজ’ হচ্ছে না।
‘সহজ’ তাদের ওয়েবসাইটে ঘোষণা দেয় গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। কিন্তু সারাদিন ওয়েবসাইটটিতে গিয়ে ‘সোল্ড আউট’ বা বিক্রি শেষ-লেখা দেখেছেন অনেকেই।
সহজ ডটকমের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, প্রতিটি টিকিটের দামের সঙ্গে দিতে হবে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও ২৫ টাকা অনলাইন চার্জ। অর্থাৎ অনলাইনে ১০০ টাকার একটি টিকিট কিনতে ১৪০ এবং ১৫০ টাকার টিকিটে ব্যয় হবে ২০২ টাকা।