খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬: ভারতের স্বার্থে রামপালে সুন্দরবন ধ্বংসকারী কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের দাবী জানিয়ে ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, সরকার দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে ভারতের তাবেদারী করছে। জনবিচ্ছিন্ন ও ভোটারবিহীন সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ভারতের স্বার্থে দেশ বিরোধী দাসখত চুক্তি করেছে। রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে সরকার সুন্দরবন ও জীব বৈচিত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে। অবৈধ সরকারের সাথে অবৈধ চুক্তি ও প্রকল্প বাংলাদেশের জনগন প্রতিহত করবে। কেননা ইতোমধ্যে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান এনপিটিসি নিজ দেশ ভারতের নরসিংহপুর, কর্নাটক রাজ্য, তামিলনাডু রাজ্য ও শ্রীলংকা থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে প্রকল্প গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের মারাত্মক ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়ার সব তথ্য প্রমান উপস্থাপনের পরেও সরকার দেশবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প আছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের স্থানেরও অনেক বিকল্প আছে, কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নাই। আমরা সরকারকে সুন্দরবনকে নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার হঠকারী, অযৌক্তিক ও অলাভজনক প্রকল্প বাতিলের দাবী জানাই। প্রতিদিন দেশে ও বিদেশে দেশপ্রেমিক ও মানবতাবাদী ব্যাক্তি, গোষ্টি ও সংগঠন জনস্বার্থ ও পরিবেশ বিপন্নকারী প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেও সরকার শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলন দমন করে চলছে।
তিনি আরো বলেন, রামপাল প্রকল্প দেশের দক্ষিনাঞ্চলের প্রাকৃতিক বেষ্টনী ধ্বংস করবে, জীব বৈচিত্রের বিলোপ ঘটাবে, লাখ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা ধ্বংসের কারন হবে, পরিবেশ ও পানি দুষিত করবে, আশে পাশের কৃষি জমির উর্বরা শক্তি এবং মৎস সম্পদ ধ্বংস করবে এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন সরকারের যুক্তিহীন জেদ ও দ্রুততা শুধু সন্দেহ জনক নয়, দেশবাসীর জন্য চরম উদ্বেগের বিষয়। বিদ্যুত কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কর্তৃপক্ষ, রামসার কনভেনশনের সচিবালয়, বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর ও দেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের আপত্তি অগ্রায্য করে সরকার প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ৮ হাজার হাজার পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপুরন না দিয়ে বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফসলী জমি ও মাছের ঘের ভরাট করা হচ্ছে। উচ্ছেদকৃত কৃষিজীবিদের সাথে সুন্দরবনে কাঠ, গোলপাতা, মধু সংগ্রহকারী ও আশে পাশের নদী ও খালে মাছ শিকারী হাজার হাজার পরিবার বেকার ও নিঃস্ব হয়ে যাবে। তাই দেশ ও মানুষের স্বার্থে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ লড়াই সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আজ ১৫ অক্টোবর (শনিবার) বেলা ১১ টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সুন্দরবন রক্ষার দাবীতে সংহতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তাব্যে একথা বলেন।
লেবার পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মোঃ আলাউদ্দিন আলীর সভাপতিত্বে কর্মসুচীতে প্রধান বক্তা ছিলেন লেবার পার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, বিষেশ অতিথি লেবার পার্টির ভাইশ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ ফারুক রহমান। বিএনপির মহানগর সিনিয়র সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান।বক্তাব্য রাখেন লেবার পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক মহসিন ভুইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসাইন, দক্ষিন জেলা সভাপতি ডাঃ জুনু মিয়া, নগর সাধারন সম্পাদক মজিবুর রহমান মুজিব, নগর যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মোঃ আফসার উদ্দিন, দক্ষিন জেলা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম,প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম সওদাগর প্রমুখ।