খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক এবং ড. রূপা হক যুক্তরাজ্যের বিরোধীদল লেবার পার্টির ছায়ামন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ায় ব্রিটিশ রাজনীতিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদদের অবস্থান আরো সংহত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার কন্যা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক সম্প্রতি লেবার পার্টির নেতা জেরমি করবিনের ছায়া সরকারের মিনিস্টার অব আর্লি ইয়ার্স এডুকেশন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
অপরদিকে ড. রূপা হক লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রিপরিষদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন।
জেরমি করবিন লেবার পার্টির নেতা হিসিবে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর পুনর্গঠিত ছায়া মন্ত্রিপরিষদে তাদের এই নিয়োগ দেয়া হয়।
এখানে রাজনৈতিক বিশেষøকরা বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিক এবং রূপা হক ছায়া মন্ত্রিপরিষদে অভিষিক্ত হওয়ায় যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদদের অবস্থান আরো জোরদার হয়েছে।
টিউলিপ ২০১৫ সালের ৭ মে’র নির্বাচনে লেবার পার্টির টিকেটে লন্ডনের সবচেয়ে প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচনী গুরুত্বপূর্ণ আসন হ্যাম্পস্টেড ও লিকবুর্ন থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি নির্বাচিত হন।
তিনি নির্বাচনে ২৩,৯৭৭ ভোট পেয়েছেন, তার প্রতিপক্ষ কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী সিমন মার্কাস পেয়েছেন ২২,৮৩৯ ভোট।
তিনি লন্ডনের মিচহ্যামে ১৯৮২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। টিউলিপ লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্য এবং পলিটিকস, পলিসি এন্ড গভর্নমেন্ট বিষয়ে দু’টি মাস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন।
উইকিপিডিয়ার তথ্যে জানা যায়, টিউলিপ রিজেন্ট’স পার্কের সাবেক কাউন্সিলর এবং ক্যামডেন কাউন্সিলের কালচার এন্ড কমিউনিটিস’র বিষয়ক মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছিলেন।
টিউলিপ ২০১০ সালের মে মাসে ক্যামডেন কাউন্সিলের প্রথম বাঙালি মহিলা কাউন্সিলর ছিলেন। তিনি গত বছর প্রথম পার্লামেন্টারি নির্বাচনে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রী পরিষদে নিয়োগ পাওয়ার পর টিউলিপ টুইট করেন ‘ছায়া সরকারের শিক্ষামন্ত্রী এ্যাঞ্জেলা রেইনারের অধীনে সদস্য হিসেবে আমি গর্বিত- আমরা শিক্ষা এবং আর্লি ইয়ার্স বিষয়ে সরকারের সঙ্গে লড়বো।’
রূপা হক গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে ইলিং সেন্ট্রাল ও অ্যাকটন’ আসন থেকে ২২,০০২ ভোট পেয়ে লেবার পার্টির এমপি নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টি সমর্থিত এ্যানজাই ব্রে পান ২১,৭২৮ ভোট। তার বিজয়ে লেবার পার্টি ‘ইলিং সেন্ট্রাল ও এ্যাকটন আসন ফিরে পায়।
রূপা হক কিংসটন ইউনিভার্সিটির সোসিওলোজি বিভাগের সিনিয়র লেকচারার। তার পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশের পাবনা জেলায়।
এরআগে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রথম ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী প্রথমবারের মতো ইন্টান্যাশনাল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড এডুকেশন বিষয়ক ছায়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারী রুশনারা আলীর বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। তিনি ২০১০ সালের নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন। তার বিজয়ের মাধ্যমে প্রথম বৃটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রাজনীতিবিদের যাত্রা শুরু হয়।
গত নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ১১ জন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন।
এদের মধ্যে লেবার পার্টি থেকে ৭ জন, লিবারেল ডেমক্রাট থেকে ৩ জন এবং কনজারভেটিভ থেকে ১ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন।
এই নির্বাচনে বাংলাদেশী তিন কন্যা রুশনারা আলী, টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক ও রূপা হক এমপি নির্বাচিত হন।