খোলা বাজার২৪ মঙ্গলবার, ১৮অক্টোবর, ২০১৬: বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ডিসেম্বরে ব্রাসেলসে একটি বৈঠক করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদোন।
তিনি বলেন, আগামী ২০ ডিসেম্বর ইইউ সদর দফতরে বাংলাদেশ-ইইউ যৌথ কমিশনের গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার সংক্রান্ত উপ-কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে ভবিষ্যৎ নির্বাচন কমিশনের জন্যে কারিগরি কোনো সহায়তার প্রয়োজন হবে কি না সেটিও আলোচনা হবে।
সোমবার গুলশানে অবস্থিত লেক শো’র হোটেলে কূটনৈতিক সংবাদদাতাদের সংগঠন ডিকাব আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে ইইউ রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায় এই সময়টাকে অনেক দূরে বলে মনে হয়। প্রকৃতপক্ষে এটা খুব বেশি দূরে নয়। গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার সংক্রান্ত উপ কমিটির বৈঠকে এটি এক নম্বর এজেন্ডা।’
পিয়েরে মায়াদোন আরও জানান, নভেম্বরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করবে। ওই প্রতিনিধিদল মূলত বাংলাদেশ-ইইউ বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ে আলোচনা করবে।
বাংলাদেশের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ব্লগার, প্রকাশক, সংখ্যালঘু, সমকামীসহ ৫০ জন লোক বিভিন্ন হামলায় নিহত হওয়ার পর গুলশানে হামলার ঘটনায় আমরা বিস্মিত হয়েছিলাম এমন নয়। কিন্তু গুলশানে হামলার ভয়াবহতার মাত্রা দেখে আমরা রীতিমত হতবাক হয়ে পড়েছি।’
‘এরপর সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এতে করে আস্থা ফিরেছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতির আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। ইংল্যান্ডের ক্রিকেট দলের সফর ও চীনের প্রেসিডেন্টের সফরের ফলে প্রমাণ হয় যে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে’ যোগ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, ‘আমরা মোটেও ভীত নই, তবে আমরা সতর্ক। সন্ত্রাস দমনে বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে মিলিয়ে সমন্বিত উপায়ে আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।নিরাপত্তার জন্যে বিদেশী কূটনীতিক মিশনগুলো আনসার নিচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ফরেন ডোনেশন অ্যাক্ট করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি এনজিওবান্ধব দেশ হলেও এ আইন এনজিওদের মাধ্যমে বিদেশী সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে। নতুন এ আইনের ফলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়ে পড়বে।
চীনের প্রেসিডেন্টের সফর সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন মাত্রায় কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আছে। সাধারণত কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক ৩৬০ ডিগ্রি ক্ষেত্রে সম্পৃক্ততা বাড়ে।
তিনি বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব সৃষ্টি করায় আমাদের সঙ্গে কোনো সংঘাতের সৃষ্টি হবে না, বরং চীনের অংশগ্রহণ সহযোগিতামূলক হবে। ইইউর সঙ্গেও চীনের কৌশলগত অংশিদারিত্ব রয়েছে।বিভিন্ন অভিযানে জঙ্গিদের নিহত হওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে পিয়েরে মায়াদোন বলেন, ‘এসব অভিযানে যেসব জঙ্গি মারা যাচ্ছে, তাদের হত্যা করা পরিহার করা আদৌ সম্ভব ছিল কিনা সেটা আমার জানা নেই।’
ডিকাব সভাপতি আঙ্গুর নাহার মন্টির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক পান্থ রহমান।