খোলা বাজার২৪ মঙ্গলবার, ১৮অক্টোবর, ২০১৬: যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের হিলসবরো শহরে রিপাবলিকান পার্টির একটি অফিসে ‘আগুন বোমা’ হামলার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে ওই হামলায় রিপাবলিকান পার্টির অফিসটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে কেউ আহত হয়নি। অন্যদিকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে কারচুপির যে অভিযোগ রিপাবলিকান প্রার্থী ডেনাল্ড ট্রাম্প করেছেন তার সমালোচনা করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা। এমনকি তার দলের নেতারাও এই অভিযোগ মানতে নারাজ।
স্থানীয় সময় রবিবার রাতে নর্থ ক্যারোলিনার অরেঞ্জ কাউন্টি রিপাবলিকান পার্টি হেডকোয়ার্টারের জানালা দিয়ে কে বা কারা দাহ্য তরল পদার্থ ভর্তি একটি বোমা ছুড়ে মারে। এতে বেশ কিছু কাগজপত্র এবং অন্যান্য সামগ্রী পুড়ে যায়। এছাড়া কাছেই আরেকটি ভবনে স্প্রে দিয়ে লিখে দেওয়া হয় ‘নাত্সী রিপাবলিকানরা এই শহর ছেড়ে যা, না হলে…’। রিপাবলিকান পার্টির এক নেতা একে ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদ’ বলে বর্ণনা করেছেন। দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘটনায় ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের দায়ী করেছেন। এক টুইটার বার্তায় তিনি লিখেছেন, হিলারি ক্লিনটন ও ডেম’দের প্রতিনিধিত্বকারী জানোয়াররা নর্থ ক্যারোলিনার অরেঞ্জ কাউন্টিতে আমাদের অফিসে আগুনে বোমা মেরেছে, কারণ আমরা জিতছি।
অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন এ ঘটনাকে ‘ভয়াবহ এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে এর নিন্দা করেছেন। এ ঘটনার পর অন্যান্য রিপাবলিকান কার্যালয়কে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে।
এদিকে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে নতুন সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ কারণে ৮ নভেম্বরের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তবে তার এই বক্তব্য মানছেন না দলের নেতারাই। নির্বাচনী কর্মকর্তারাও এর সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের বক্তব্যের পরই তার রানিংমেট মাইক পেন্স জানিয়েছেন, নির্বাচনে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু হবে। তাদের দল ভোটের ফল মেনে নেবে। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রাম্পের এমন বক্তব্য ভোটের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করবে। ট্রাম্প যে ষড়যন্ত্রতত্ত্বের কথা বলছেন তা আমেরিকার রাজনৈতিক মানদণ্ডের ওপর বড় আঘাত। ডেমোক্র্যাট ও গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ তিনি তুলেছেন এর স্বপক্ষে কোনো যুক্তি দেননি। গতকাল বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের বক্তব্যে নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সরকারি কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে আরো বলেছেন, ট্রাম্প ক্রমাগত এই অভিযোগ তুললে ভোটাররা আগ্রহ হারাতে পারে। আবার ট্রাম্প হেরে গেলে তার সমর্থকরা ফলাফলের বৈধতা মানতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। আর রিপাবলিকান দলের নির্বাচন বিষয়ক আইনজীবী ক্রিস অ্যাশবাই বলেছেন, ট্রাম্প নজিরবিহীনভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপর আক্রমণ করেছেন। নির্বাচনী দিনকে কলঙ্কিত করার ঝুঁকি তৈরি করেছেন।
এদিকে, ১৯ অক্টোবর (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার, সকাল সাতটা) ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিনটন সর্বশেষ বিতর্কে মুখোমুখি হবেন। তৃতীয় বিতর্কের আগে সিএনএন’র এক জরিপে ৮ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন হিলারি ক্লিনটন। গতকাল প্রকাশ করা জরিপে দেখা যায়, হিলারির পক্ষে ৪৭ শতাংশ ও ট্রাম্পের পক্ষে ৩৯ শতাংশ ভোটারের সমর্থন রয়েছে।